রাতভর হামলার পর রাফা সীমান্ত ক্রসিংয়ের গাজা অংশের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার (৭ মে) গাজার ‘লাইফলাইন’ খ্যাত এলাকাটি দখলের পর সেখানে আর্টিলারিসহ বিপুল ইসরায়েলি সেনা অবস্থান নিয়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের অভিযানের উদ্দেশ্যে সেনাবহরটি জনবসতির দিকে এগোনোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। আরব নিউজ ও আল জাজিরা জানায়, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পরও রাফায় অভিযানের অনুমোদন দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরপরই রাতের অন্ধকারে রাফায় ঢুকে পড়ে ইসরায়েলি ট্যাংক।
এ সময়কার ভিডিও ফুটেজ সম্প্রচার করে মিসরের আল কাহেরা টেলিভিশন। ওই ফুটেজে বন্দুকযুদ্ধ ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ট্যাংক এবং হেলিকপ্টারের শব্দও শুনতে পাওয়া যায়। মিসরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেখে মনে হচ্ছে স্বল্প পরিসরে অভিযান চালানো হবে। অভিযান শেষে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়েও মিসরকে জানিয়েছে ইসরায়েল। যদিও এ বিষয়ে মুখ খোলেনি তেল আবিব। সকালে রাফা ক্রসিংয়ের কয়েকটি অসমর্থিত ফুটেজ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, সড়কের পাশে ‘আই লাভ গাজা’ লেখা ভাস্কর্য ইসরায়েলি ট্যাংক গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া ক্রসিংয়ে থাকা ফিলিস্তিনি পতাকাও সরিয়ে ফেলে দখলদাররা।
দ্য টাইমস অব ইসরায়েল একটি ফুটেজ সম্প্রচার করে। তাকে দেখা যায়, বিশাল ইসরায়েলি পতাকা উড়িয়ে একটি ট্যাংক সীমান্ত সড়কে টহল দিচ্ছে। এ ভিডিওয়ের বর্ণনায় বলা হয়েছে, মিসর অভিমুখে রাফা ক্রসিংয়ের গাজা অংশের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলিদের হাতে। গাজার দক্ষিণে রাফা। গাজার সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগে অন্যতম রাফা সীমান্ত ক্রসিং। মিসরের সিনাই মরুভূমি সংলগ্ন একটি সীমান্ত পথ এ ক্রসিং। অন্য দুটি সীমান্ত পথ অনেক আগে থেকে ইসরায়েলের দখলে থাকায় মিসরের এই সীমান্ত পথটিই গাজার উদ্বাস্তুদের একমাত্র ভরসা ছিল।
এ কারণে রাফা সীমান্তটিই বেসামরিক নাগরিকদের গাজা ত্যাগ করার একমাত্র স্থলপথ হিসেবে বিবেচিত। গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রেও রাফা গুরুত্বপূর্ণ। এবার এ পথটিও ইসরায়েলের দখলে চলে যাওয়ায় ত্রাণসহায়তা অনেকটা স্থবির হয়ে পড়বে। আরও দুর্ভোগে পড়বেন যুদ্ধে বিধ্বস্ত গাজাবাসী।