উন্মুক্ত বনে ঘুরে বেড়াচ্ছে হিংস্র রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ অথবা ভালুক। কাছ থেকে দেখার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অর্জনের এমন সুযোগ শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে সম্ভব। আর প্রতি ঈদে ভ্রমণপিপাসুদের প্রথম পছন্দ এই পার্ক। পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটে। তাদের জন্য পার্কের রাস্তা, সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছপালা এবং প্রাণীদের বেষ্টনীগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। সরেজমিনে দেখা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ঈদ উপলক্ষে বিনোদন ও প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে নতুন সাজে। ৩৮ হাজারের বেশি একর বনভূমিতে গড়ে তোলা পার্কটি দুই ভাগে বিভক্ত। একটি কোর সাফারি এবং অপরটি সাফারি কিংডম। পার্কের সামনে অল্প এগোলেই ডান পাশে পড়বে কোর সাফারি এবং বাম দিকে সাফারি কিংডম। ওপর থেকে দেখার জন্য পার্কের ভেতরে রয়েছে কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার। আছে ঝুলন্ত ব্রিজ ও হাতিতে চড়ার ব্যবস্থা। বাঘ ও সিংহের বেষ্টনীর কাছে দুটি রেস্তোরাঁ রয়েছে।
এই রেস্তোরাঁয় বসে খাবার খেতে খেতে বাঘ-সিংহ কাছ থেকে দেখার সুযোগ মিলে যেতে পারে। কোর সাফারিতে বেষ্টনীর ভেতর আলাদা আলাদাভাবে বাঘ, সিংহ, ভালুক, জিরাফ, জেব্রা, বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ, গয়াল, নীলগাই উন্মুক্ত আকারে রাখা হয়েছে। বিশেষভাবে তৈরি গাড়িতে করে কোর সাফারিতে প্রবেশ করতে হয়। সাফারি কিংডমে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে হয়। এখানে রাখা প্রাণিগুলো আবদ্ধ করে রাখা। এখানে রয়েছে প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, ম্যাকাউ ল্যান্ড, ছোট পাখিশালা, ফেন্সি ডাক গার্ডেন, কুমির পার্ক, প্রজাপতি গার্ডেন, ইমু/অস্ট্রিচ গার্ডেন, কচ্ছপ ও কাছিম প্রজনন কেন্দ্র, লিজার্ড পার্ক, ভালচার হাউস, হাতিশালা, মেরিন অ্যাকোয়ারিয়াম, অর্কিড হাউস, পেলিকন আইল্যন্ড ঝুলন্ত ব্রিজ, এগ ওয়ার্ল্ড, ধনেশ এভিয়ারি, প্রাইমেট হাউস, লেক জোন, বোটিং লেক, লাম চিতার ঘর, ক্যাঙ্গারু এভিয়ারি, প্রাকৃতিক ইতিহাসের জাদুঘর, শিশু পার্ক।
কোর সাফারি এবং সাফারি কিংডমে প্রবেশ করতে হয় টিকিট কেটে। ইজারাদাররা বলেছেন, ঈদে পর্যটকদের সমাগম বাড়ে। এ উপলক্ষে পরিবারের মধ্যে থাকা শিশুদের বিনা টিকিটে প্রবেশের সুযোগ থাকছে। এছাড়া অনেক প্রাণীর নতুন শাবকের জম্ম হয়েছে যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করবে। সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, যে কোনো উৎসব এবং ছুটির দিনে বিনোদন ও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। ঈদের দিন থেকে শুরু করে পরের বেশ কিছুদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এখানে আসে। তাদের কথা বিবেচনা করে পার্কের রাস্তা, সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছপালা এবং প্রাণীদের বেষ্টনীগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
ঈদে আগত পর্যটকদের সুবিধার্থে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন , সাফারি পার্কসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেলা প্রশাসন নিবিড় যোগাযোগ রাখছে। এ ছাড়া সেখানে টুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে ৭০ প্রজাতির প্রায় ৫ হাজার প্রাণি রয়েছে। এগুলো ঈদ মৌসুমে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ দেবে বলে মনে করছে পার্ক কর্তৃপক্ষ।