মাত্র ৫০০ সেনা থাকা সত্ত্বেও নিজস্ব ধর্মগুরুর তত্ত্বাবধানে ধর্মীয় চর্চার সুযোগ পেয়ে আসছিল জার্মানির ইহুদি সেনারা। খ্রিষ্টান সেনাদের জন্যও ছিল একই সুবিধা। তবে এতদিন কয়েক হাজার মুসলিম সেনা সদস্যের জন্য এ ধরনের কোনো সুযোগই ছিল না জার্মান সেনাবাহিনীতে। সম্প্রতি এমন অবস্থার পরিবর্তন করতে যাচ্ছে বার্লিন। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মান সেনাবাহিনীর মুসলিম সদস্যরা এতকাল খ্রিষ্টান বা ইহুদিদের মতো ‘পাস্টোরাল কেয়ার’ বা ধর্মগুরুর সহায়তা নেওয়ার সুযোগ পাননি। অতীতে যে দলই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিল, তারাই এই বিষয়টিকে অসম্ভব মনে করেছিল। ফলে বছরের পর বছর জার্মান সামরিক বাহিনীতে মুসলিম ধর্মগুরুদের সেবা দিতে দেখা যায়নি। যদিও জার্মান সামরিক বাহিনীতে তিন হাজারের মতো মুসলিম সেনা রয়েছেন। জার্মান সশস্ত্র বাহিনীর সংসদীয় কমিশনার এফা হ্যোগল মার্চের মাঝামাঝি সময়ে তার তৃতীয় বাৎসরিক প্রতিবেদনে মুসলমানদের জন্য ‘মিলিটারি চাপল্যান্সি’ বা ধর্মগুরুর সহায়তার দিকে গুরুত্ব দেন। তিনি মনে করেন যে, ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী সেনাদের জন্য এটা না থাকাটা খুবই অসন্তোষজনক ব্যাপার। তাই তিনি দ্রুত এ ক্ষেত্রে যোগ্যদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হ্যোগল গত বছর দক্ষিণপূর্ব তুরস্কে ভূমিকম্পের পর জার্মান সেনাদের সেখানে উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত হওয়ার কথা স্মরণ করেন। সেখানে মোতায়েন করা সেনাদের মধ্যে মুসলমান সেনারাও ছিলেন। তা সত্ত্বেও সেখানে দুই অমুসলিম সামরিক ধর্মগুরু ‘পাস্টোরাল কেয়ার’ দিয়েছেন।
ডয়চে ভেলের এক প্রশ্নের জবাবে জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বেশ কয়েক বছর ধরেই মুসলিম সেনাদের জন্য আলাদা ‘পাস্টোরাল কেয়ার’ চালুর বিষয়টি জার্মান সামরিক বাহিনীতে আলোচিত হয়েছে। ক্যাথলিক এবং ইহুদি সামরিক ধর্মগুরুরাও এই প্রয়োজনীয়তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং নরওয়ের সামরিক বাহিনীতে ইসলামী ধর্মগুরু রয়েছেন। তাদের অধিকাংশের সামরিক ইমামও রয়েছে। জার্মানিতে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় ঘাটতি আছে। কারণ, এ দেশে এমন কোনো সংগঠন নেই যেটি সব ইসলামী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে।জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র ডয়চে ভেলেকে নিশ্চিত করেছেন যে মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে সামরিক বাহিনীতে মুসলমানদের জন্য ‘পাস্টোরাল কেয়ার’ চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।