রাশিয়ান ফেডারেশনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান ১৯ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত রাশিয়ার ইভানোভো অঞ্চল সফর করেন। সফরকালে তিনি এই অঞ্চলের গভর্নর. ভসক্রিসেন্সকি স্তানিস্লাভ সার্গেইভিচের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উভয় দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নানাবিধ বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান গত দেড় দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সংঘটিত হয়েছে সে সম্পর্কে গভর্ণরকে অবহিত করেন। তিনি দু’দেশের মধ্যেকার বিদ্যমান অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধিকল্পে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশে নির্মাণাধীন রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণখাতে রাশিয়ার আরও সক্রিয় অংশগ্রহণ আশা করেন।
ইভানোভো শহরটি রাশিয়ার পোষাক শিল্পের জন্য বিখ্যাত এবং এই শহরে অনেক পোষাক তৈরির কারখানা রয়েছে। পোষাক কারখানাগুলোতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ ও সহযোগিতার জন্য রাষ্ট্রদূত গভর্ণর সার্গেইভিচকে অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত। দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয় এ সময় গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়।
গভর্ণর ভসক্রিসেন্সকি স্তানিস্লাভ সার্গেইভিচ দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ এবং সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে কথা বলবেন বলে রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে অবহিত করেন।
এছাড়াও বাংলাদেশের সাথে ইভানোভো অঞ্চলের বাণিজ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ অন্যান্য বিষয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তিনি তার সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে অঙ্গীকার করেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো: মাজেদুর রহমান সরকার এবং ইভানোভোর আঞ্চলিক সরকারের বাণিজ্য, বিনিয়োগ , শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পর্যটন, শ্রম বিষয়ক পরিচালকবৃ্দ।
সফরকালে রাষ্ট্রদূত স্থানীয় চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট লিওনিদ ইভানভ ও চেম্বারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ইভানোভো অঞ্চলের সাথে কিভাবে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা হয়। পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধিকল্পে রাষ্ট্রদূত এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নিজেদের পণ্য প্রদর্শণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। এতে রাশিয়ান পণ্য সম্পর্কে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ ভালো ধারণা পেতে পারে।
এছাড়াও বাংলাদেশে অবস্থিত রাশিয়ান দূতাবাসের সহযোগিতায় শুধুমাত্র রাশিয়ার বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বৃহৎ পরিসরে ঢাকায় পৃথক মেলা বা প্রদর্শণীর আয়োজন করা যেতে পারে বলে রাষ্ট্রদূত মতামত দেন। শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্পর্ক বদ্ধিকল্পে ইভানোভো স্টেট পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটিতে রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানের সঙ্গে এই অঞ্চলের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের একটি মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হয়।