• বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৭ অপরাহ্ন
                               

অবরোধে দগ্ধ হয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন যারা

রিপোর্টারঃ / ৩২০ বার ভিজিট
আপডেটঃ রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩

বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর ডাকে সমাবেশ ও অবরোধে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনায় এপর্যন্ত ৬ জন দগ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হচ্ছেন, যাত্রাবাড়ীতে বাস যাত্রী আব্দুস জব্বার (৪৫), পোষাক শ্রমিক মো: মাহমুদ হাসান (২৩), মেরাদিয়ার পরিবহন শ্রমিক সবুজ মিয়া (৩০), কালীগঞ্জে কাভারভ্যান থাকা বিপ্রজীদ ভাওয়ালী (২০), কাকরাইলে শ্রমিক শাখাওয়াত হোসেন (২৮) ও ডেমরায় বাসে ঘুমন্ত থাকা হেলপার মো: রবিউল ইসলাম রবি (২৫)।

শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এখানে এ পর্যন্ত ৬ জন দগ্ধ হয়ে এসেছে। তারা সকলেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পেট্রোলে দগ্ধের কারণে তাদের শরীরে ক্ষতগুলো গভীর। তারা শঙ্কা মুক্ত হলেও অনেকেরই অপারেশন প্রয়োজন হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকের চামড়া লাগাতে হচ্ছে। আমরা তাদের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি।

দগ্ধদের মধ্যে, জব্বারের ২০ শতাংশ, হাসানের ১১ শতাংশ, সবুজের ২৮ শতাংশ, বিপ্রজীত এর ৭ শতাংশ, শাখাওয়াত এর ১০ শতাংশ ও রবি ১৭ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন। যাত্রাবাড়িতে শনিবার (১১ নভেম্বর) রাতে অনাবিল পরিবহনের দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে বাসযাত্রী দগ্ধ রিকশা চালক আব্দুস জব্বার (৪৫) ও গার্মেন্টেস কর্মী মাহমুদ হাসান (২৩) দগ্ধ হন। ঐ রাতেই তাদের বার্ণ ইনিস্টিউটের নেয়া হয়েছে।

জব্বারের বড় ভাই, জিকরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তার ভাই পেশায় রিকশা চালক। তিনি থাকতেন রামপুরা এলাকার একটি রিকশার গ্যারেজে। নীলফামারীর জেলার জলঢাকা উপজেলার বামনবামনী গ্রামের মৃত শওকত দি মাহমুদ এর ছেলে জব্বার। তার স্ত্রী’র নাম ফজিলা বেগম। এই দম্পতির আছে চার সন্তান

তিনি বলেন, জব্বার রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতে পারতো না। সংসারে অভাব লেগেই থাকতো। তাই শনিবার (১১ নভেম্বর) তার পরিবারকে কাজে উদ্দেশ্যে সকালে আমার বাসায় নারায়ণগঞ্জ নিয়ে আসি। জব্বার তার কাজ শেষ করে রাতে নারায়ণগঞ্জ আমার বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্য বাসে চড়ে আসার পথে যাত্রবাড়িতে বাসে আগুনে দগ্ধ হয়।

তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ নিজের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে আবার ভাই দগ্ধ হয়েছে। তার চিকিৎসা করার জন্য আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতায় চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে।

একই বাসে দগ্ধ হওয়া যাত্রী মাহমুদুল হাসান (২৩) জানিয়েছেন, তিনি নারায়ণগঞ্জের মনিরা অ্যাপারেলস এ অপারেটর হিসাবে কাজ করেন। কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার চান্দেরচর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম এর ছেলে। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ লাইন এলাকায় থেকে গার্মেন্টেসে কাজ করতেন।

তিনি বলেন, আমার এক বন্ধুর মোবাইল ফোন কিনতে বসুন্ধরা মার্কেটে গিয়েছিলাম। তা কিনে তাকে দিয়ে কমলাপুর থেকে বাসে উঠে মাঝামাঝি বসেছিলাম। যাত্রবাড়ি এলাকায় বাসটি আসার পর হঠাৎ দেখে আমার পায়ের নিচ দিয়ে আগুন লেগে গেছে। পরে দ্রুত ঐ সিট থেকে কোন রকম বের হয়ে যাই। ততোক্ষণে আমার দুই পা ও ডান হাত ঝলসে গেছে ।

অপর দিকে, রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৭ টার দিকে খিলগাঁও মেরাদিয়া বাঁশপট্টি এলাকায় অসিম পরিবহনে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে মো: সবুজ মিয়া (৩০) বাস যাত্রী দগ্ধ হন। তিনি রমজান পরিবহনের বাস চালক ছিলেন। তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

তার স্ত্রী রুশেদা বেগম জানিয়েছেন, সবুজ পরিবহন শ্রমিক। মেরুল-বাড্ডার আনন্দনগর এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন। তার বাসটি মেরাদিয়া রাস্তার পাশে ছিল। তিনি ডিউটিতে যাওয়া জন্য, ঐ দিন সকালে মেরুল বাড্ডা আনন্দ নগর বাসা থেকে বের হয়ে বাসে করে মেরাদিয়া বাঁশপট্টি গিয়ে নামার আগ মুহুর্তে বাসটি দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। সেই আগুনে তিনি দগ্ধ হন। ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার গোদারিয়া গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে সবুজ। তিনি এক ছেলে এক মেয়ের জনক।

অন্যদিকে, গত ২৮ অক্টোবর বিকালে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে পুলিশের রিকুজিশন করা এশিয়ান পরিবহনের একটি বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। সেখানে বাসের সুপারভাইজার শাখাওয়াত হোসেন (২৮) দগ্ধ হন। ঐ দিন রাতে তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন তার শরীরের ১০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার কংঙ্গাইল গ্রামের মো: সিরাজ মিয়ার ছেলে শাখাওয়াত।

এদিকে, (২৯ অক্টোবর) ভোর তিনটার দিকে ডেমরা’র দেইল্লা বাস স্টেশনে রাস্তার পাশে পার্কিং করা অসিম পরিবহনের একটি বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। এতে ঘুমন্ত অবস্থায় নাঈম নামে হেলাপার মারা যায়, আর দগ্ধ হয়ে আহত হয় হেলপার রবিউল ইসলাম রবি (২৫)। তাকে ডেমরা থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করায়। আর নিহতের মরদেহ মিডফোর্ট মর্গে ময়নাতদন্তের পর স্বজনরা নিয়ে যান।

অন্য দিকে, গত ৮ নভেম্বর ভোরে গাজীপুরের কালীগঞ্জে কাভাভ্যানে আগুন দেন দুর্বৃত্তরা। ঐ কাভার ভ্যানে থাকা বিপ্রজীত ভাওয়ালী (২০) ও আনোয়ার (৪৮) নামে দুইজন দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আনোয়ার বাসায় চলে যান। বিপ্রজীত চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে তাকে বার্ণ ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।

বার্ণ ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, তার মা স্বপ্না ভাওয়ালী তার পাশে বসে আছেন। বিপ্রজীত ভাওয়ালী বলেন, তিনি ফ্রেশ কোম্পানিতে কাজ করেন। বগুড়ায় তাদের কোম্পানির গাড়ির সমস্যা হয। তাই সেখানে গিয়েছিলেন, সেখানে গাড়ির কাজ শেষ করে একই কোম্পানির একটি কাভার্ডভ্যান যোগে ফিরার পথে, কালিগঞ্জ এলাকায় রাস্তায় ৯/১০ জন তাদের গাড়িটিকে পথরোধ করে ভাঙ্গচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ি থেকে নামতে নামতে শরীরের আগুন ধরে যায়।

রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার রতনদিয়া গ্রামের মনোরঞ্জন ভাওয়ালীর ছেলে বিপ্রজীত ভাওয়ালী নারায়ণগঞ্জে মেঘনা বাস কাউন্টারের পাশে থাকতেন। তারা দুই ভাই, দু’জনই ফ্রেশ কোম্পানিতে কাজ করেন।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

আজকের দিন-তারিখ

  • বৃহস্পতিবার (দুপুর ১:১৭)
  • ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  

Our Website Visitors Summary

  • ৫৩
  • ৬৮
  • ৮৭
  • ৬৬০
  • ১,৮৮৭
  • ২৫,৪৫৫
  • ৩৪,৪৯৩