কৃষির ওপর পূর্ণ নির্ভরশীলতা কাটিয়ে পরিপূর্ণ শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের বেশ কয়েকজন সদস্য এবং কর্মকতা। ব্রাসেলসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বর্তমান সদস্য, সদস্যদের প্রতিনিধি ও সাবেক সদস্যদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে এই সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য টমাস দেচোফস্কি এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টাডি সার্কল লন্ডন-এর চেয়ারম্যান সৈয়দ মোজাম্মেল আলী যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ৭ নভেম্বর (মঙ্গলবার) সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক, বাংলাদেশের পোশাক খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং গঠনমূলক আলোচনার গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করা হয়। সম্মেলনে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। এ দেশের অর্থনীতি মাত্র দুই দশকে আটগুণ বেড়েছে। ২০০০ সালের পর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে পোশাক খাতের কারণে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ব্যাপক বিনিয়োগের ফলে বাংলাদেশের সব জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হয়েছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য টমাস দেচোফস্কি বলেন, ‘বাংলাদেশ যা অর্জন করেছে, তা অনন্য। এই বিশাল সাফল্য উদযাপন করা উচিত।’ এ সময় তিনি গঠনমূলক আলোচনা এবং বাংলাদেশের যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে, তা স্বীকার করে উদযাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সম্মেলনে বাংলাদেশের সমালোচনা না করে এ দেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব দৃঢ় করার ওপরও জোর দেওয়া হয়। সম্মেলনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয় এবং আশা প্রকাশ করা হয় গণতন্ত্রের জয় হবে। আলোচকেরা বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর যে সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়েছে, তা দৃঢ় সম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থার কারণেই।
সম্মেলনে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য মার্গুলহাওয়ের উপদেষ্টা সারাহ বুগেজা, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বহিঃসম্পর্ক বিভাগের কর্মকর্তা লোটে পিটার্স, পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য পাওলো কাসাকা, ইইউর ইলেকশন অবজারভেশন ডিপার্টমেন্ট–এর উপদেষ্টা মারকুয়েজ ফেলিক্স, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ইকোনমিক পলিসিস ডিপার্টমেন্ট–এর কর্মকর্তা জর্ডান ডি বোনো, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া বিভাগের কর্মকর্তা নাদিয়া সাবাতিনি, বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুত ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বাংলাদেশের হেড অব মিশন মাহবুব হাসান সালেহ, বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।