বর্তমানে বাংলাদেশে ৫২টি বিদেশি দূতাবাস আছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। সোমবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ৬০টি দেশে বাংলাদেশের ৮১টি কূটনৈতিক মিশন চালু রয়েছে। এছাড়া আরও ১১টি নতুন মিশন স্থাপনের লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সব প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে চালুর অপেক্ষায় থাকা দুটি মিশন রয়েছে। তা হল কাবুল (আফগানিস্তান) ও ফ্রিটাউন (সিয়েরালিওন)।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোহর বাহরু (মালয়েশিয়া) ও আসলোতে (নরওয়ে) মিশন স্থাপনে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত অনুমোদন ও মন্ত্রিসভার সদয় অনুমোদনের পর ওআইসি (জেদ্দা, সৌদি আরব) স্থায়ী মিশন স্থাপনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরে বুয়েন্স আয়ারস (আর্জেন্টিনা), ডাবলিন (আয়ারল্যান্ড), ফ্রাঙ্কফুট (জার্মানি), সাওপাওলো (ব্রাজিল) ও গুয়াংজোতে (চীন) মিশন স্থাপনের জন্য পরবর্তী অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নাসরিন জাহান রতনার প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা অনেক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সেবাগুলো হলো- প্রবাসে জেল পরিদর্শন; প্রবাসীদের প্রত্যাবাসন; পাসপোর্ট, ট্রাভেল পারমিট ও এনভিআর (ভিসা প্রয়োজন নেই) বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিকদের প্রযোজ্য; কাগজপত্র সত্যায়ন; অনিয়মিত বাংলাদেশিদের নিয়মিত করার ব্যাপারে কূটনৈতিক চেষ্টা; প্রবাসীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা এবং দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ ও নাগরিকত্ব পরিত্যাগ।
নওগাঁ-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে ‘ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি’ এর বিকল্প নেই। তাই উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার কার্যকর কূটনৈতিক প্রয়াসের মাধ্যমে বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ ও মূল্যবোধ সংরক্ষণ এবং ভাবমূর্তি সংরক্ষণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতির ভিত্তি হিসাবে পাঁচটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সেগুলো হল-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ বহুমুখীকরণ; রফতানি বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণ; বিদেশে বাংলাদেশি অভিবাসীদের লাভজনক কর্মসংস্থান সৃষ্টি; প্রযুক্তি হস্তান্তর; বিদেশে বাংলাদেশি অভিবাসীদের মানসম্মত সেবা নিশ্চিতকরণ।