ইসরায়েলের অবিরাম হামলায় অবরুদ্ধ গাজা। উপত্যাকা পরিণত হয়েছে মৃত্যুকূপে। ইসরায়েলের হামলায় এই পর্যন্ত গাজার দুই হাজার ৬৭০ বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে নারী ও শিশু। আহত হয়েছে নয় হাজার ৬০০ জন। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সম্ভাব্য স্থল অভিযান চালানোর অপেক্ষায় নেতানিয়াহুর সরকারের সামরিক বাহিনী। গাজা ছেড়ে যেতে ফিলিস্তিনিদেরকে দেওয়া আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পরপরই স্থল, আকাশ ও সমুদ্র-তিন পথেই ব্যাপক আক্রমণের প্রস্তুতি নিয়েছে ইসরায়েল। তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, গাজা দখল হবে মারাত্মক ভুল। মার্কিন টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু সরকারকে এভাবে সতর্ক করেছেন তিনি। খবর এএফপির। ফরাসি সংবাদ সংস্থাটিতে গতকাল সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সিবিএস নিউজ’কে এক ঘণ্টার সাক্ষাৎকারে জো বাইডেন বলেছেন, গাজায় যা ঘটেছে, আমার দৃষ্টিতে তা হলো হামাস এবং হামাসের বন্ধুরা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। আমি মনে করি-ইসরায়েলের জন্য আবার গাজা দখল করা একটি ভুল। কিন্তু, ভেতরে প্রবেশ করে হিজবুল্লাহ ও হামাসের মতো বিদ্রোহীদের ধ্বংস করে দেওয়া প্রয়োজন। গাজার মানুষদের ছেড়ে যাওয়ার জন্য একটি মানবিক করিডোর তৈরি করতে এবং ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য সমর্থন করেছেন বাইডেন। তবে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালানো হামাসকে নির্মূল করা দরকার। হামাসের বিষয়ে কোনো ছাড় দিতে রাজি নয় যুক্তরাষ্ট্র। সাক্ষাৎকারে সেই ইঙ্গিত দিয়ে মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘হামাস ফিলিস্তিনি জনগণের সবার প্রতিনিধিত্ব করে না। আমরা হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে চাই। আমি নিশ্চিত যে, ইসরায়েল জেনেভা কনভেনশন মেনেই কাজ করবে।’ তবে, বাইডেন ইসরায়েলের জন্য প্রথমে একটি রণতরী পাঠিয়েছেন। পরে আরও একটি রণতরী পাঠিয়ে দ্বৈত ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এদিকে, ইসরায়েলে মার্কিন সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই বলেও মন্তব্য করেছেন বাইডেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি এবং তারা প্রেসিডেন্টের ভ্রমণ সম্পর্কে অভ্যন্তরীণ আলোচনার বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছে না। যদিও বাইডেনের সফর ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থনের বড় বার্তা হিসেবেই দেখা হবে। তবে, বাইডেন হামাসের সঙ্গে সংঘাত ইস্যুতে সংযমের আহ্বান জানিয়ে আসছেন। গত শনিবার রাতে ইসরায়েলি বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ‘বিস্তৃত পরিসরের’ গাজায় অভিযান চালানো হবে। তবে কবে, কখন এটি শুরু হবে সেটি নিশ্চিত করেনি দখলদারদের সেনা। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি রোববার জানান, খুব শিগগিরই গাজায় প্রবেশ করবে তাদের সেনারা এবং গাজায় গিয়ে হামাসকে ধ্বংস করবে তারা।