বিশ্বকাপে আজ রোববার নয়া দিল্লিতে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের মোকাবেলা করবে আফগানিস্তান। এই ম্যাচের মাধ্যমে নিজের সাবেক দলের সাথে বর্তমান দলের লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছেন আফগানিস্তানের কোচ জোনাথন ট্রট। গত বছর জুলাইয়ে আয়ারল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি সফর ও অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সাবেক আরেক ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান গ্র্যাহাম থর্পের অসুস্থতার সুবাদে আফগানদের কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন ট্রট। ৪২ বছর বয়সী ট্রট ইংল্যান্ডের হয়ে ২০০রও বেশী আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ২০২১ সালে ভারত সফরে তিনি ইংল্যান্ড দলের ব্যাটিং কোচ ছিলেন। টি-টোয়েন্টি ফর্মেটে নি:সন্দেহে এই মুহূর্তে অন্যতম প্রতিভাবান দল হিসেবে আফগান নিজেদের প্রমান করেছে। বিশেষ করে তাদের স্পিনার রশিদ খান এই ধরনের ছোট ফর্মেটে বিশ^জুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে অন্যতম আকর্ষনীয় একজন খেলোয়াড়। তবে ৫০ ওভারের ম্যাচে এখনো নিজেদের মেলে ধরতে পারছে না আফগানিস্তান। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ও ভারতের বিপক্ষে বিশ^কাপের প্রথম দুই ম্যাচে হেরেছে ট্রট বাহিনী। এর মাধ্যমে বিশ^কাপে টানা ১৪ ম্যাচে তারা পরাজিত হলো। ২০২১ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ জয়ী হয়েছিল আফগানরা। রান খরার কারনেই আফগানরা ওয়ানডেতে নিজেদের প্রমান ব্যর্থ হচ্ছে। ভারতের বিপক্ষে ৮ উইকেটে পরাজয়ের ম্যাচটিতে হাশমতুল্লাহ শাহিদী ও আজমাতুল্লাহ ওমরজাই হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। কিন্তু ঐ রান শেষ পর্যন্ত কোন কাজে আসেনি। কেপ টাউনে জন্মগ্রহণকারী ট্রটের বাবা ব্রিটিশ ও মা দক্ষিণ আফ্রিকান। অনুর্ধ্ব-১৫ ও অনুর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যুব দলের হয়ে খেলেছেন ট্রট। কিন্তু এরপর ব্রিটিশ পাসপোর্টের সুবিধা নিয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কোচ বব উলমারের সাথে সুসম্পর্কেও ভিত্তিতে ইংলিশ কাউন্টিতে খেলার সুযোগ পান ট্রট। মিডল্যান্ডস ক্লাবের হয়ে তিনি নিজেকে প্রমান করেন। ২০০৯ সালে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেকেই তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন। এর মাধ্যমে ট্রটের বর্ণাঢ্য ইংলিশ ক্যারিয়ারের সূচনা হয়। ৫২ টেস্টে ৪৪.০৮ গড়ে ৯টি সেঞ্চুরিসহ করেছেন প্রায় ৪ হাজার রান। অসুস্থতার কারণে ২০১৩/১৪ এ্যাশেজ সফর থেকে বাদ পড়েছিলেন। যদিও ঐ সময় তৎকালীন কোচ এন্ডি ফ্লাওয়ারের সাথে তার সম্পর্কটা ভাল যাচ্ছিলনা। এরপর আবারো লড়াই করে ২০১৫ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তিনি দলে ফিরেছিলেন। ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষনা দেন। কোচিং ক্যারিয়ার শুরুর দিকে বেশ কিছু জাতীয় দলই তার প্রতি আগ্রহী ছিল। আফগানিস্তান জাতীয় দলের দায়িত্ব নেবার পর ১৪ মাস হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত নিরাপত্তার অযুহাতে ঘরের মাঠে ট্রটের অধীনে কোন ম্যাচ খেলতে পারেনি আফগানরা। ট্রট গত সপ্তাহে গার্ডিয়ানে বলেছেন, ‘বিভিন্ন কারণে আফগানিস্তানের চাপ আমি বেশ উপভোগ করছি। অনেক সময় শুধুমাত্র ব্যাটিং বা বোলিং কোচ হিসেবে একটি সীমিত বিষয়ের মধ্যে নিজেকে আটকে রাখতে হয়। কিন্তু মূল দলের কোচ হিসেবে অনেক কিছুই করার সুযোগ থাকে। প্রধান কোচ হিসেবে দলের পুরো দায়িত্ব একজন কোচের উপর বর্তায়। আর এখানে পিছনে ফিরে তাকানোর কোন অবকাশ নেই। যেকোন মূল্যেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবার পরিকল্পনা প্রতিদিনই করতে হয়।