জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, আজকের শিশুরা জ্ঞানবিজ্ঞান, মুক্ত চিন্তা-চেতনায় সমৃদ্ধ হয় উঠলেই আগামী দিনের বিশ্ব তার সুন্দর প্রভাব ও ফল পাবে; বিশ্ব হয়ে উঠবে আরও সুন্দর, আরও শান্তিময়। তাই সবার আগে আমাদের শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। শিশুদের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। একজন শিশুও যেন শিক্ষার বাইরে না থাকে সেটি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শিশুদের জন্য খেলাধুলার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে স্পিকার বলেন, খেলাধুলা বেড়ে ওঠার একটি অপরিহার্য অংশ। শুধু লেখাপড়া না, লেখাপড়ার পাশাপাশি আমরা যেন আমাদের শিশুদের খেলাধুলার যথেষ্ট সুযোগ করে দিতে পারি সেটিও দেখতে হবে। এছাড়া যে বিষয়টি এখন প্রত্যেকটি শহরেই খেলার মাঠ সেভাবে পাওয়া যায় না, সে বিষয়টির প্রতি আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।
শিশুদের উদ্দেশে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, তোমাদের মনে রাখতে হবে তোমরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছ। কিন্তু এদেশে এখনও অনেক শিশুরা আছে যারা দারিদ্র্যের মধ্যে থাকে এবং অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমাদের দেশে এখনও শিশুশ্রম আছে। টাকা দেওয়ার মাধ্যমে তার পরিবারকে সহায়তা করে শিশুশ্রম থেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে আসার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। তবে এ পরিধি আরও বাড়াতে হবে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়টি নিয়েও কাজ চলছে।
তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সেই স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিকদের এখনই সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। জ্ঞানবিজ্ঞান, গণিত চর্চাসহ বিভিন্নভাবে তাদের এগিয়ে নিতে হবে যেন তারা পিছিয়ে না পড়ে। সব থেকে বড় যে বিষয়, একজন শিশু যেন একজন মানবিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে, দেশকে ভালোবাসতে পারে, এভাবেই তাদের এখন থেকে গড়ে তুলতে হবে।
আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। তিনি বলেন, শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। আগামী দিনে শিশুরাই রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে। শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ হয়ে গড়ে তুলবে উন্নত-সমৃদ্ধ নতুন বিশ্ব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের জন্য সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। জাতির পিতা ১৯৭২ সালে সংবিধানে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করেন। জাতিসংঘ ১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার সনদ ঘোষণার ১৫ বছর আগে ১৯৭৪ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা শিশুদের অধিকার সুরক্ষার জন্য শিশু আইন প্রণয়ন করেন। সদ্য স্বাধীন দেশে শিশুর শিক্ষা, সুরক্ষা ও উন্নয়নে কল্যাণকর বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টি, সুরক্ষা অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন আইন, নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ইউনিসেফের প্রতিনিধি ডেলা বিহাম ও বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম। আলোচনা শেষে শিশু একাডেমির শিশুদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।