বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলা নিয়ে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব তথ্য দিয়েছেন সেগুলোকে ‘মিথ্যাচার’ বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ভয়েস অব আমেরিকাকে প্রধানমন্ত্রী কিছু কথা বলেছেন। যেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা নেই। তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যে কথা তারা (আওয়ামী লীগ) বলে দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ, তা ব্যাংকে আট কোটি টাকার ওপর হয়ে গেছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে, খালেদা জিয়া যেন রাজনীতিতে থাকতে না পারেন, তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। তারেক রহমানকেও একই ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল হাইস্কুলের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ আয়োজিত ‘জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী কনভেনশনে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্য, মজুরি কমিশন, জাতীয় বেতন স্কেল, নূন্যতম মজুরি, শ্রম পরিস্থিতি ও চলমান এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ কনভেনশন আয়োজন করা হয়। সরকার ৪৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরকম একটি ভয়াবহ রাষ্ট্র তৈরি করা হয়েছে। এটাকে রাষ্ট্র বলা যাবে না, এটা আওয়ামী লীগের নির্যাতনের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, শ্রমিক শ্রেণি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। আবারও তারা লড়াই করবে আমরা বিশ্বাস করি। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সমগ্র দেশের মানুষ জেগে উঠেছে একটি মাত্র দাবি নিয়ে। সেই দাবি হচ্ছে এই মুহূর্তে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, এই মুহূর্তে সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমগ্র দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ, সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সবার আজ এক দফা, শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ। এই সরকার আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের সব অর্জন ধ্বংস করেছে। এ সরকারকে দেশের মানুষ আর এক মুহূর্তও দেখতে চায় না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া তার গোটা রাজনৈতিক জীবনে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। আজকে তাকে অন্যায়ভাবে ও বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। তাকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যে লড়াই করছি ইনশাআল্লাহ সেই লড়াইয়ে বিজয় হবো। এ সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো। দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে সক্ষম হবো। শ্রমিক কর্মচারী কনভেনশন আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে কনভেনশনে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফ হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সারোয়ার প্রমুখ।