আশাশুনির কাকবাসিয়া বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ১জন ও চতুর্থ শ্রেণির ৪ কর্মচারী নিয়োগে ৮০ লক্ষ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগের দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন দুই চাকরি প্রত্যাশী কাকবাসিয়া গ্রামের মনিরুজ্জামান, রেক্সোনা খাতুন, অভিভাবক ইউপি সদস্য এটিএম গাজী ও রেজাউল করিম সানা।
লিখিত আবেদনে তারা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পারভীন সুলতানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তিনি অবৈধ ভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তার অবৈধ নিয়োগের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা বিচারাধীন আছে। বিজ্ঞ আদালত তার নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করে কিন্তু তিনি আপিল করে স্ব-পদে বহাল আছেন। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি গঠনে অনিয়মের মাধ্যমে তার ছেলে ইয়ামিনকে দাতা সদস্য নির্বাচন করে। যার প্রতিবাদে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের সকল মহলকে জানানো হয়। কিন্তু কোন প্রতিকার হয়নি। দুর্নীতিবাজ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পারভীন সুলতানা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ না দিয়ে ৩১-১২-২০১৯ তারিখ থেকে অদ্যাবদি প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য রেখেছেন। উক্ত পদে নিয়োগ দিলে পরবর্তীতে নিয়োগ বাণিজ্য করতে পারবে না। তাই সু-কৌশলে ২৫-০৪-২০২৩ তারিখে বিভিন্ন সময়ে পত্র-পত্রিকায় দুর্নীতির অভিযোগে শিরোনাম হয়ে যাওয়া অধ্যক্ষ ড. শিহাবুদ্দীন গাজীকে এই বিদ্যালয়ের সভাপতি তৈরী করে এবং তার ভাইপো কালাম গাজীকে ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য তৈরী করে স্কুলটিকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন।
ধূর্ত সভাপতির নেতৃত্বে তারা চারজনে মিলে বিদ্যালয়টি দুর্নীতির আখড়া তৈরী করে চলেছেন। ড. শিহাবুদ্দীন গাজী স্কুলের সভাপতি হওয়ার পর থেকে তিনি তার স্বভাবসুলভ আচরণে অনিয়ম ও দুর্নীতি শুরু করেন। দীর্ঘ দিন প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ না দিয়ে তার স্ত্রীকে সামনে রেখে মূলত: তিনি নিজেই ৩য় শ্রেণীর ও ৪জন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেন।
অভিযোগকারী কাকবাসিয়া গ্রামের মৃত সামছুদ্দিনের ছেলে মনিরুজ্জামান বলেন, নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা এবং সিরাজুল ইসলাম সানার স্ত্রী রেকসনা খাতুনকে আয়া পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সভাপতি শিহাবুদ্দীন গাজী ৮ লক্ষ টাকা নগদ গ্রহণ করে। একই ভাবে অন্যান্য আরও আগ্রহী প্রার্থীদের নিকট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমাদের কাছ থেকে নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ১৮ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেও নিয়োগ সক্রান্তে আমাদেরকে কিছুই না জানিয়ে উক্ত পদে অন্যান্যদের নিকট থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে নিয়ে গোপনে দরখাস্ত যাচাই বাছাই করেছেন। অথচ ধুর্ত সভাপতি আমাদের টাকা ফেরৎ দেননি। বিষয়টি আমরা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য অভিভাবক প্রতিনিধি ও ছেলে মেয়েদের অভিভাবকদেরকে জানাই। স্থানীয়ভাবে আমরা কোন প্রতিকার না পেয়ে তার নিয়োগ বানিজ্যের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধন করে প্রশাসনের সকল মহলকে অবহিত করেছি। দুর্নীতিবাজ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ও তার সভাপতি স্বামী শিহাবুদ্দীন গাজীর ৮০ লক্ষ টাকা নিয়োগ বানিজ্য বন্ধ করে প্রতারনার মাধ্যমে গ্রহণকৃত ১৮ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বচ্ছভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার আবেদন জানিয়েছেন প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী আবেদনকারী।
সূত্র: দৈনিক পত্রদূত