সাদিকা পারভিন পপি। যিনি ঢাকাই সিনেমায় পপি নামেই অধিক পরিচিত। ১৯৭৯ সালের (১০ সেপ্টেম্বর) এই দিনে তিনি খুলনার শিববাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা করেছেন খুলনার মুন্নুজান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘কুলি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৯৭ সালে বাংলা চলচ্চিত্রে এই নায়িকার অভিষেক হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন পপি। (১০ সেপ্টেম্বর) পপির জন্মদিন। জন্মদিনে আড়ালেই রয়েছেন লাস্যময়ী এই নায়িকা। ২০২০ সালে হঠাৎ করে উধাও হয়ে যান পপি। সবকিছু থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে গা ঢাকা দেন তিনি। এরপর বিয়ে ও সন্তান জন্মের সংবাদের শিরোনামে হয়েছেন অনেকবার। বিয়ে এবং সন্তান জন্ম দিতেই এই নায়িকার আড়ালে যাওয়ার কারণ হিসেবে জানা গেছে।
২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন পপি। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, স্বপ্ন দেখতে দেখতে তুমি এসে হাজির, অন্ধকারে ভালোবাসার ঝলকানি। এরপর আর ফেসবুকে তাকে পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ ৩ বছর ধরে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে রাজধানীতে স্বামী আদনানের সঙ্গে সংসার করছেন নায়িকা। তার সঙ্গে পরিবারের অন্য কারো যোগাযোগ না থাকলেও ছোট বোন সুমির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও দেখা হলেও তাও আপাতত বিছিন্ন রয়েছে বলে জানা গেছে।
পপিকে এখন আর চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কোনো অনুষ্ঠানে বা কোনো তারকার ঘরোয়া কোনো অনুষ্ঠানেও দেখা যাচ্ছে না। পপির হঠাৎ আড়াল হয়ে যাবার কারণে তার শুটিং চলতি কয়েকটি সিনেমার কাজ বন্ধ হয়েই আছে। সিনেমাগুলোর ভবিষ্যৎ কী তা নিয়ে পরিচালকরাই রয়েছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ সময় শুটিং বিরতির পর ‘ভালোবাসা প্রজাপতি’ সিনেমার মাধ্যমে নতুন করে অভিনয় শুরু করেন পপি। এরপর ২০২১ সালের শুরুর দিকে হঠাৎ করেই সবার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এর আগে ২০২০ সালের আগস্টে পপির বিয়ের খবর রটেছিল। সেসময় পপি জানিয়েছিলেন, বিয়ের খবর সত্য নয়।
বিয়ে ও সন্তান নিয়ে বারবার খবরের শিরোনাম হলেও নীরব রয়েছেন এই তারকাভিনেত্রী। সিনেমাপাড়ার কেউ জানে না পপির খবর। সবকিছু থেকে নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন নায়িকা। তার পূর্বের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তবে নতুন একটি নাম্বার নিয়েছেন বলে জানা গেছে। যেটি তার একান্ত মানুষরাই অবগত রয়েছেন।
‘ভালোবাসার প্রজাপ্রতি’ সিনেমার শুটিং অর্ধেক করেই লাপাত্তা হয়ে যান তিনি। হঠাৎ করে পপি উধাও হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সিনেমাটির পরিচালক। বর্তমানে তিনি পপিকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন। মনের মানুষকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই নায়িকা। তিনি আর অভিনয় করবেন না বলেও পপির বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। সন্তান জন্মের পর নিজেকে ফিট করার জন্য নিয়মিত জিম করছেন।
একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরিচিতি লাভ করেন পপি। ১৯৯৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ সিনেমাতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। কিন্তু তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘কুলি’। এই চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ওমর সানী। সিনেমাটি সেই সময়ে ৭ কোটি টাকা ব্যবসা করে মাইলফলক করে। এরপর ১৯৯৮ সালে রিয়াজের বিপরীতে ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ১৯৯৯ সালে মান্নার বিপরীতে ‘কে আমার বাবা’ ও ‘লাল বাদশা’, ২০০২ সালে কমল সরকার পরিচালিত ‘ক্ষেপা বাসু’ ও বাবুল রেজার ‘ওদের ধর’ সিনেমাগুলো ব্যবসাসফল হয়।মান্না প্রযোজিত ‘লাল বাদশা’ সিনেমা ব্যবসা সফল হয় ও তার অভিনয় জীবনে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। একে একে তার সাথে অভিনয় করেন ২২টি সিনেমায়। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি পপি টেলিভিশন নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন।