বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান জানিয়েছেন কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ২০১ জন কৃষিবিদ। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, গত ২৮ আগস্ট কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের কিছু সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রদত্ত এক খোলা চিঠিতে বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এটি সার্বভৌম একটি দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ। দেশের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে আমরা বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর এ ধরনের হস্তক্ষেপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
আমরা স্পট ভাষায় বলতে চাই যে, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন। অতএব এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে বিবৃতি-দাতাগণ অনৈতিক, বেআইনি ও অ-সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন। এ ধরনের বিবৃত্তি বা খোলা চিঠি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলির সম্পূর্ণ পরিপন্থি। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, এ ধরনের বিবৃত্তি ও চিঠি প্রদান করে বিবৃতি-দাতা সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ ও নোবেল বিজয়ীগণ প্রকৃতপক্ষে ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থী কাজকেই উৎসাহিত করতে চেয়েছেন। বাংলাদেশের সংবিধানে সবারই আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারকার্য বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারে ও স্বাধীনভাবে সম্পন্ন হচ্ছে বিধায় তাঁর বিচারিক হেনস্তার অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত, অমূলক। আমরা মনে করি বিবৃতি-দাতা সম্মানিত ব্যক্তিগণ মামলা সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে এমন দাবি উত্থাপন করেছেন। আমরা তাদের অথবা তাদের প্রতিনিধি এসে মামলায় ড. ইউনুসকে আদৌ হয়রানি করা হচ্ছে কি না, তা তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন মর্মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছেন, আমরা তা সমর্থন করি।
বিদেশি স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিদের নিজ নিজ দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিরাজমান রয়েছে। আমরা আশা করি, তারা তাদের নিজ নিজ দেশের মতো বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকেও আইনের নিজস্ব গতিতে চলার সুযোগ দেবেন।
বিবৃতি দেওয়া কৃষিবিদরা হলেন, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ও কার্যনির্বাহী সদস্য কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সাবেক মহাসচিব কৃষিবিদ ড. মির্জা এ জলিল, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী সদস্য কৃষিবিদ প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী সদস্য কৃষিবিদ প্রফেসর ড. নীতীশ চন্দ্র দেবনাথ,চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য কৃষিবিদ গৌতম বুদ্ধ দাস,শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সভাপতি কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কৃষিবিদ প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা,খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মো. আবুল কাসেম চৌধুরী, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব কৃষিবিদ প্রফেসর ড. এ কে এম জাকির হোসেন সহ ২০১ জন কৃষিবিদ।