বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ৩ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট প্যাকেজ তুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে গণবিরোধী বলে আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। বিটিআরসির এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। ১৩ সেপ্টেম্বর, বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক গ্রাহক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। সমাবেশে অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মোবাইল অপারেটরদের ব্যবসা বাড়ানোর হীন চক্রান্ত বাস্তবায়নে সরকার, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো একজোট হয়ে কাজ করছে। বর্তমান যুগের বাস্তবতায় মোবাইল ইন্টারনেট কোনো বিলাসী পণ্য-সেবা নয়, বরং খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের মতো এটিও একটি মৌলিক পরিষেবা হয়ে উঠেছে।
অথচ নানা সময় বিভিন্ন ঠুনকো অজুহাত দেখিয়ে সরকার অথবা সেবাদাতা মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোকে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বাড়িয়েই চলেছে। যেখানে অপারেটরদের এমন অশুভ তৎপরতা রুখতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির এগিয়ে আসার কথা সেখানে উল্টো মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বাড়াতে তারা যেন অপারেটরের সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।তিনি বলেন, সরকার যখন স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ৩ দিনের মতো স্বল্প মেয়াদি ইন্টারনেট প্যাকেজ বাদ দিয়ে পরোক্ষভাবে ইন্টারনেটের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর জারি করা এক নির্দেশনায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল অপারেটরদের ১৫ অক্টোবর থেকে ৩ ও ১৫ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। কীসের ভিত্তিতে এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বিটিআরসি নিলো সেটি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। এর মাধ্যমে ভোক্তাদের পছন্দের স্বাধীনতা সীমিত করা হবে।
তিনি বলেন, ৩ দিনের প্যাকেজ বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে বিটিআরসি বলছে, অপারেটরদের বর্তমানে ৯৫ ধরনের প্যাকেজ আছে, যার মেয়াদ এক ঘণ্টা থেকে শুরু করে অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যন্ত আছে। কিন্তু অপারেটরদের প্যাকেজ সংখ্যা ৪০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ করতে হলে ৩ দিন মেয়াদের প্যাকেজ বাদ দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এ যেন অনেকটা মাথা ব্যথা কমাতে গিয়ে মাথা কেটে ফেলার মতো একটি অবস্থা। যেখানে অপারেটরদের বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ গ্রাহক ৩ দিন বা তারও কম মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজ ব্যবহার করেন।
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রান্তিক ও স্বল্প আয়ের সাধারণ শ্রেণির গ্রাহকদের ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনতে হলে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে অবশ্যই স্বল্প সময়ের প্যাকেজগুলো অব্যাহত রাখতে হবে। তাছাড়া অব্যবহৃত ইন্টারনেট ডাটা পরবর্তীতে ব্যবহারের সুযোগ অবশ্যই রাখতে হবে। তাই বর্তমানে প্রচলিত প্যাকেজ বহাল রেখে মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন।