হার দিয়ে ২০২৩ এশিয়া কাপ মিশন শুরু করলো বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের ‘বি’ গ্রুপে নিজদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। তবে শ্রীলংকার বোলিংয়ের সামনে শান্ত ছাড়া কেউই খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। পিচে আসা-যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন টাইগার ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত ৪২ ওভার ৪ বলে সব উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে ক্রিকেট মানেই আবেগ। আবেগ থেকেই হয়ত বোলিংয়ে টাইগাররা মিরাকেল কিছু করবেন সেই অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। শুরুতে তেমন আশাও দেখিয়েছিল সাকিব তাসকিনরা। কিন্তু এত ছোট পুঁজি নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারেনি বাংলাদেশ। হেরেই এশিয়া কাপ শুরু করতে হলো বাংলাদেশের।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে প্রথম সাফল্য পায় বাংলাদেশ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে দিমুথ করুনারত্নেকে (১) বোল্ড করেন তাসকিন। পরের ওভারে শরিফুল পাথুম নিশাঙ্কাকে (১৪) বানান উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ। ১৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।
বেশ ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করছিলেন কুশল মেন্ডিস। তবে টাইগার অধিনায়কের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মেন্ডিস (২১ বলে ৫)। ৪৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কিছু চাপে পরে লঙ্কানরা। আশা দেখতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু চতুর্থ উইকেটে সাদিরা সামারাবিক্রমা আর চারিথ আসালাঙ্কার জুটি সেই আশায় জল ঢেলে দেয়।
শেষদিকে এসে সামারাবিক্রমাকে মেহেদী ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে সাকিব ফিরিয়ে দিলেও ততখনে অনেক দেরি হয়ে যায়। ৯২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৬২ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন আসালাঙ্কা। এর আগে লঙ্কান বোলারদের বিরুদ্ধে একার লড়ে যান নাজমুল হাসান শান্ত। ১২২ বলে ৮৯ রান করে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার।
তানজিদ হাসান তামিমকে নিয়ে অনেকেরই আশা ছিল। কিন্তু অভিষেক ম্যাচটা রাঙাতে পারলেন না তরুণ তানজিদ হাসান তামিম। লঙ্কান স্পিনার মাহিশ থিকসানার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে শূন্য রানে ফিরে যান তামিম।
এরপর নাইম শেখকে তুলে নেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ২৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৬ রানেই থামে নাইমের ইনিংস। হতাশ করেন অধিনায়ক সাকিবও। লঙ্কানদের ‘জুনিয়র মালিঙ্গা’ মাথিসা পাথিরানার হালকা বাউন্স ডেলিভারি বুঝতে না পেরে ব্যাট চালিয়ে উইকেটরক্ষকের কাছে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। ১১ বলে ৫ রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকে। নাজমুল হোসেন শান্ত আর তাওহিদ হৃদয় পার্টনারশিপ ভালই এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শান্ত-হৃদয়ের ৫৯ রানের জুটি থামিয়ে দেন দাসুন শানাকা। ৪১ বলে ২০ রান করেন হৃদয়।
মিস্টার ডিপেন্ডেবলের উপর ডিপেন্ড করেছিল বাংলাদেশ, তবে তার ব্যাটও আজ মলিন। লঙ্কান বিস্ময় পেসার পাথিরানার বাউন্সারে আপার কাট খেলতে গিয়েছিলেন মুশফিক। ওই পরিস্থিতিতে এমন শট না খেললেও চলতো। বল সরাসরি চলে যায় থার্ডম্যানে করুনারত্নের হাতে।
এরপর শান্তর সঙ্গে ভুল বোঝবুঝিতে ৫ রানে আউট হল মেহেদি হাসান মিরাজ। সুবিধা করতে পারেননি শেখ মেহেদিও। ৬ রান করে ওয়াল্লালেগার বলে এলবিডব্লিউ হন এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটার। এরপর সেঞ্চুরির কাছে এসেও আক্ষেপ নিয়ে ফেরেন শান্ত। ব্যক্তিগত ৮৯ রানে মাহিশ থিকসানার ঘূর্ণি বল মিস করে বোল্ড হন এই ব্যাটার। শান্ত ফেরার পর আর ২ রান যোগ করেই অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মাথিসা পাথিরানা। ৩২ রানে তিনি নিয়েছেন ৪ উইকেট। ২ উইকেট শিকার মাহিশ থিকসানার।