অনেক বীর নিজের জীবন উৎসর্গ করে মানুষের মাঝে দেশপ্রেমকে তুমুলভাবে জাগিয়ে তুলতে পারেন। আসিম জাওয়াদ তেমনই একজন। মৃত্যুর মাঝেও তিনি প্রমাণ করে গেছেন, দেশ সবার ওপরে। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে দেশের আপামর জনতা। ফেসবুকজুড়ে প্রশংসায় ভাবছেন না ফেরার দেশে চলে যাওয়া এ বৈমানিক। বলা যায়, নিজের স্ত্রী-সন্তানের চেয়ে দেশকে আর দেশের মানুষকে বড় করে দেখেছেন তিনি। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও দেশের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে বিমানকে নিয়ে গেছেন জনশূন্য এলাকায়। অর্থাৎ আমৃত্যু রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করে সবাইকে কাঁদালেন তিনি।
নেটদুনিয়ায় অনেকে মন্তব্য করেছেন এমন বীরের মৃত্যু নেই। কালে কালে ক্ষণে ক্ষণে আবারও ফিরে আসবেন তারা। অনেকেই তাকে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সঙ্গে তুলনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। দোয়া করেছেন এই বীরের জন্য। বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে পাইলট আসিম জাওয়াদের মৃত্যু হয়। ঘটনার ভিডিওটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে দেখা যায় চলন্ত প্রশিক্ষণ বিমানটির পেছনে আগুন জ্বলছে। এর কিছুক্ষণ পরই সামনের অংশ নিচের দিকে সোজা নামতে থাকে। পরে প্রচণ্ড শব্দে বিধ্বস্ত হয়।
ঘটনার পর নেটদুনিয়ায় হিরো হয়ে গেছেন স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ। ফেসবুক জুড়ে তাকে নিয়ে বীরত্বপূর্ণ মন্তব্য করছেন অনেকেই। অনেকেই জাওয়াদের ছবিসহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। আব্দুল আওয়াল নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী আসিম জাওয়াদের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘বীরদের কখনও মৃত্যু হয় না। লাখো শহীদের এ মাটিতে বীরেরা বার বার জন্মায়। কখনও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান হয়ে আবার কখনও বা স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ হয়ে।’
আরেকজন স্ট্যাটাসে বলেন, ‘বাঁচার সুযোগ থাকলেও জীবন উৎসর্গ করেন পাইলট আসিম জাওয়াদ। নিজে মরে গিয়ে বাঁচিয়ে গেলেন অনেককে।’ মানিকগঞ্জের কৃতী সন্তান আসিম জাওয়াদকে নিয়ে ইমরান আহমেদ ফেসবুকে লেখেন, আসিম জাওয়াদ অনেকগুলো জীবন বাঁচিয়ে প্রমাণ করেছেন, বীরশ্রেষ্ট মতিউররা এখনও এদেশে জন্মায়।’ বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাফেয়ার্সের সূত্র বলছে, গত ৩০ বছরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রায় ৮০টি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। তাতে প্রাণ হারিয়েছেন আসিম জাওয়াদের মতো অনেক বীর।