চলতি মাসেই যে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালু করা হবে, তাতে শুরুতে থাকবে চার ধরনের কর্মসূচি। ইতিমধ্যে এসব কর্মসূচির জন্য চাঁদার হারও ঠিক করা হয়েছে। পেনশন কর্মসূচির আওতায় চাঁদা দেওয়া যাবে ঘরে বসেই। সে জন্য একটি অ্যাপও তৈরি করা হয়েছে।
অর্থ বিভাগ সূত্র জনিয়েছে, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে আপাতত চার শ্রেণির জনগোষ্ঠীর জন্য চার ধরনের পেনশন কর্মসূচি চালু করা হচ্ছে। এগুলোর নাম হচ্ছে প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাসী।
বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য করা হচ্ছে ‘প্রগতি’। স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য হবে ‘সুরক্ষা’। প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য করা হচ্ছে ‘প্রবাসী’। আর দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য করা হচ্ছে ‘সমতা’।
উদ্বোধনের দিন অনলাইনে পেনশন কর্মসূচিতে চাঁদা দিয়ে যাতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, সে জন্য দেশের আট জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে তাঁদের মডেল পেনশনার প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। জেলাগুলো হচ্ছে গোপালগঞ্জ, সিলেট, রংপুর, পাবনা, বাগেরহাট, ময়মনসিংহ, রাঙামাটি ও বরগুনা। পেনশন কর্তৃপক্ষ একই ধরনের চিঠি দিয়েছে কুয়ালালামপুর ও জেদ্দায় থাকা বাংলাদেশ মিশনেও।
সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি এমনভাবে করা হচ্ছে, যাতে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিকই এ পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারবেন এবং ৬০ বছর বয়স থেকে তাঁরা আজীবন পেনশন পাবেন। শুরুর দিকে চিন্তা না থাকলেও পরে ৫০ বছরের বেশি বয়সীদেরও পেনশন কর্মসূচির আওতায় রাখার সুযোগ তৈরি করা হয়। টানা ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পরই তাঁরা পেনশন সুবিধা পাবেন।
কত চাঁদা কোন পেনশনে?
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ‘প্রগতি’ এবং ‘সুরক্ষা’ কর্মসূচির আওতায় চাঁদার হার নির্ধারণ করা হয়েছে মাসিক ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ‘প্রবাসী’ কর্মসূচিতে চাঁদার হার মাসিক ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে এ কর্মসূচিতে বিদেশি মুদ্রা অর্থাৎ মার্কিন ডলার, ইউরো, কুয়েতি দিনার, সৌদি রিয়াল ইত্যাদি মুদ্রায় চাঁদা দিতে হবে।
প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) বর্তমানে যে ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেয় সরকার, এখানেও তা বহাল রাখার চিন্তা করা হয়েছিল। পরে তা বাদ দেওয়া হয়। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়া যায় না।
‘সমতা’ কর্মসূচিতে চাঁদার হার থাকছে মাসিক ৫০০ টাকা। এ কর্মসূচিতে সমপরিমাণ অর্থাৎ আরও ৫০০ টাকা করে চাঁদা সরকার বহন করবে।
চাঁদা দেওয়া যাবে নগদ, বিকাশ, রকেটে
পেনশন কর্মসূচির আওতায় চাঁদা দেওয়া যাবে ঘরে বসেই। এ জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে।
অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, যাঁরা সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসতে চান, আগে তাঁদের নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের পর একটি নম্বর পাওয়া যাবে, যা দিয়ে সব সময় চাঁদা পরিশোধসহ সব কাজ করা যাবে। গ্রামীণ পর্যায়ে নিবন্ধন করতে সহযোগিতা করবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলো।
ব্যাংকের পাশাপাশি নগদ, বিকাশসহ যেকোনো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও চাঁদা পরিশোধের সুযোগ রাখা হচ্ছে।