এফএনএস: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখতে জি টু জি ভিত্তিতে রাশিয়া থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন গম কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে প্রতি কেজি গমের দাম ৩৪ টাকা ৪৩ পয়সা হিসেবে মোট খরচ হবে এক হাজার ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান সাংবাদিকদের জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে জি টু জি পদ্ধতিতে তিন লাখ মেট্রিক টন গম এক হাজার ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি কেজি গমের দাম পড়বে ৩৪ টাকা ৪৩ পয়সা। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য সংগ্রহ সুসংহত রাখতে খাদ্য মন্ত্রণালয় অভ্যন্তরীণ উৎসের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উৎস থেকেও গম সংগ্রহ করে থাকে। চলতি অর্থবছরে গমের চাহিদা সরকারি পর্যায়ে ৯ লাখ ২২ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এখন পর্যন্ত গম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এক লাখ মেট্রিক টন গম সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জানা গেছে, গম আমদানির প্রধান উৎস রাশিয়া, ইউক্রেন ও ভারত। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন এর মধ্যে যুদ্ধ বাধায় গম আমদানিতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সেই সঙ্গে দামও বেড়ে যায়। আবার ভারত সরকার গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় গমের বাজার নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ কারণে সরকারি খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার পাশাপাশি গমের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে অতি জরুরি ভিত্তিতে রাশিয়া থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির উদ্যোগ নেয়। গত ১৯ জুন রাশিয়ার ফরেন ইকোনমিক করপোরশন (এফইসি) গম সরবরাহের আগ্রহ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি দেয়। সেই চিঠি পর্যালোচনা করে দেশের চাহিদা বিবেচনায় এফইসির সঙ্গে ১৭ আগস্ট ভার্চ্যুয়াল সভায় জি টু জি পদ্ধতিতে গম আমদানির চুক্তিনামা এবং মূল্য নিয়ে আলোচনা ও নেগোশিয়েশন শেষে রাশিয়া থেকে প্রতি মেট্রিক টন সিআইএফ-এলও টার্মে ৩১৩ মার্কিন ডলার দরে তিন লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির বিষয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং উভয় পক্ষ সভার সিদ্ধান্তপত্রে সই করে। রাশিয়া প্রতিনিধিদল লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার তারিখ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে তিন লাখ মেট্রিক টন গম সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ১৫ দিন পর পর প্রতিটি জাহাজে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন জাহাজে গম সরবরাহ করবে রাশিয়া।