প্রতাপনগরে জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চিহ্নিত মৎস্যঘের দখলকারী, সন্ত্রাসী আনারুল বাহিনী কর্তৃক অসহায় মৎস্যজীবীর ঘের দখল এবং হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শ্রীপুর প্রতাপনগরের আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্ত্রী নুরুননাহার। তিনি বলেন আমরা স্বামী একজন অসহায় মৎস্যজীবী নিরিহ মানুষ। বছরের ৫ মাস সরকারের অনুমতি নিয়ে বৈধভাবে সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাকী ৭ মাস এলাকায় থেকে শ্রীপুর মৌজায় খতিয়ান নং-০১ দাগ নং-৫০৭, জমির পরিমান ৪ একর একই মৌজায় খতিয়ান নং ৬১,৫৯, দাগ নং- ৫১৯, ৪১৩, ৫৩, ৪৭৭,৪৭৯, ৪৭৬,৪৮০,৪৮০,৪৮১, ৪৮২, জমির পরিমান ১৫.৯৬ একর সম্পত্তিতে মৎস্যঘের পরিচালনা করে। এ বছর মাছ ধরার মৌসুম শেষে করে ১ এপ্রিল আমার স্বামীসহ অন্য মৎস্যজীবীরা বাড়ি ফিরেছেন। আমাদের উক্ত মৎস্যঘেরের উপর কু নজর পড়ে একই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী একাধিক নাশকতা ও পুলিশের উপর হামলা মামলার আসামী আনারুল বাহিনীর। এপর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে। প্রতাপনগরে মৎস্যঘের পরিচালনা করতে গেলে আনারুল বাহিনীকে চাঁদা দিতেই হবে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে খুন জখমসহ নানান হুমকি ধামকি প্রদর্শন করাসহ মৎস্যঘেরটি দখলের হুমকি দিয়ে আসছিল। তারা এতটাই হিং¯্র যে তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি, মারপিট ও মানহানির মত নির্যাতন করে আনারুল বাহিনী। আমার স্বামী সাগরে থাকার সুযোগে গত ১৬ মার্চ‘২০২৪ তারিখে দুপুরে কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলী গাজীর পুত্র আনারুল বাহিনীর প্রধান আনারুলের নেতৃত্বে তার ভাই আসাফুর, প্রতাপনগর গ্রামের বাবর আলী গাজীর পুত্র উজ্জ্বল গাজী, শ্রীপুর গ্রামের রুহুল আমিন গাজীর পুত্র আবু আব্দুল্লাহ, মৃত তারিফ লস্কারের পুত্র রেয়াছাদ আলী লস্কার, মৃত কুদ্দুস গাজীর পুত্র বদরু গাজী, মাছুম বিল্লাহ, রেয়াছাদ আলী লস্কারের পুত্র আবু হাসান, রজব আলী গাজীর পুত্র আব্দুল খালেক, মাজেদ গাজীর পুত্র আবু হাসান, কালাম ঢালীর পুত্র মারুফ হোসেন গং দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের মৎস্যঘেরে প্রবেশ করে। সে সময় আমি মৎস্যঘেরে আমিসহ কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে উক্ত মৎস্যঘের দখল করে নেয়। এঘটনায় আমি আশাশুনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
এরপর আমাকেসহ পরিবারের সদস্যদের খুন জখমের হুমকি প্রদর্শণ করলে আশাশুনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করি। তাদের বিরুদ্ধে ডজনখানেক মামলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মামলা দেওয়া হল। আশাশুনি থানার মামলা নং- ১৫/৩৪, তাং- ২০.০৩.২০২৪, মামলা নং-০১/৪৫, তাং ২৮/২/১৩, মামলা নং ০৫/৭১, তাং- ১০/০৪/২০১৭, মামলা নং-০৮/২৬, তাং-২১/০২/২০১৭, মামলা নং-০৫/২৩, তাং-০২/০২/২০২৭, মামলা নং-৯/৫৭, তাং০৩/০৩/২০২৪, মামলা নং-১৩/১৩. তাং-০২/০১/২০১৭, সিআরপি ৩/১৭।তিনি আরো বলেন যে সময় তারা আমাদের ঘের দখল করে তখন আমার স্বামীসহ স্বজনদের অনেকেই সাগরে ছিলো। সাগর থেকে ফিরে এসে যাতে আমার স্বামী তার ঘেরটি উদ্ধারে তৎপর না হয় সে কারনেই তার বিরুদ্ধে নানান মিথ্যাচার করে পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে আনারুল বাহিনীর হোতা আবু আব্দুল্লাহ। এদের মধ্যে আব্দুল খালেক একজন জলদস্যু। প্রকাশ্যে পিস্তল নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। প্রকৃতপক্ষে আনারুল, খালেকগংই এলাকায় ত্রাসের রজত্ব গড়ে তুলেছে। ইচ্ছামত অন্যের জমি দখল লুটপাট তারাই করে। আমাদের ঘেরটিও তারা দখল করেছে। যাতে আমরা সেটি উদ্ধারে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারে সে কারণে আমার স্বামীসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার। দীর্ঘ ৫ মাস পর আমার স্বামী বাড়ি ফিরলেও শান্তিতে আমরা বসবাস করতে পারছি না তাদের ভয়ে। তিনি আনারুল বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক মৎস্যঘের উদ্ধার পূর্বক শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।