প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্রলীগ হচ্ছে তারুণ্যর সেই শক্তি। যারা সব সময় যেকোনো দুর্যোগে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এই তারুণ্যের শক্তি একদিন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আজকে দেখছি ছাত্রলীগ প্রত্যেকটা দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে ; এটা দেখে আমার গর্ভে বুক ভরে যায়।
এই আদর্শ নিয়ে ছাত্রলীগ যদি চলতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ বন্ধ করতে পারবে না-এই বিশ্বাস আমার আছে।
করোনা, বন্যা দুর্যোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রেই ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি করোনার সময় কৃষকের ধান পর্যন্ত কেটে দিয়েছে এই ছাত্রলীগ। প্রথমে ছাত্রলীগ গিয়েছে এরপর অন্যান্য সংগঠন গিয়েছে এটা ঠিক। এজন্য তাদের প্রতি আমার অনেক বিশ্বাস, অনেক আস্থা। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্রসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল আর আমি ছাত্রলীগের হাতে কলম ও বই তুলে দিয়েছি। তাদেরকে বলেছি তোমরা পড়াশোনা করো। অশিক্ষিত, মূর্খদের হাতে দেশ তুলে দিলে কোনদিন অগ্রযাত্রা হতে পারে না।
তিনি বলেন, ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নাম পর্যন্ত তারা মুছে ফেলেছে। সাত মার্চের ভাষণ এদেশে নিষিদ্ধ ছিল। জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ ছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসে স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য। সাত খুনের আসাম সহ অনেকে ক্ষমা করে দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করব। সে স্বপ্ন নিয়ে, যে চেতনা নিয়ে আমার পিতা দেশকে স্বাধীন করেছেন তার সেই স্বপ্ন পূরণ করব সেই প্রতিজ্ঞা নিয়েই দেশে ফিরেছিলাম। স্বাধীনতার পর পরই ষড়যন্ত্র শুরু হয়, চক্রান্ত শুরু হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গোছাতে অনেক কাজ করতে হয়। কিন্তু তারা সে সময় দেয়নি। সে অবস্থায় যখন জাতির পিতা দায়িত্ব নিলেন, তিন কোটি মানুষ গৃহহারা। মুক্তিযোদ্ধা পঙ্গু অথবা অসুস্থ। তখন দেশে দুর্ভিক্ষ। প্রতিটি দিকে জাতির পিতা নজর দিয়েছিলেন। এরপরও আমরা দেখেছি একটি শ্রেণি ধ্বংসাত্মক কাজ করছিল। তারা স্বাধীনতাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের রাস্তাঘাট সবকিছু ঠিক হয়ে আসছিলো তার মত বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ছিল বলেই। ১২৬টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে তিনি উজ্জ্বল করেছিলেন। চেয়েছিলেন এই ঘুনে ধরার সমাজ ভেঙ্গে নতুন সমাজ গড়তে। সেজন্য জাতির পিতা ১৯৭৪ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী সমাবেশে বলেছিলেন ছাত্রলীগের উদ্দেশ্য করে, সবকিছু করতে পারবা যদি একটা জায়গায় ঠিক থাকো। সেটা হলো তোমাদের স্বাধীনতা। এর আগে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন গেটের সামনে জড়ো হতে থাকেন। মিছিল-স্লোগানে টিএসসি গেইট, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গেট, বাংলা একাডেমির সামনের গেইটসহ পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে।