রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর শহরতলির এক কনসার্ট অনুষ্ঠানস্থলে বন্দুকধারীরা অন্তত ৬০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে। খবরটি জানিয়েছে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি। শুক্রবারের এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৪৫ জন আহত হয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, সামরিক বাহিনীর মতো পোশাক পরা বন্দুকধারীরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে সঙ্গীতানুষ্ঠানে আগত লোকজনের দিকে নির্বিচার গুলি ছোড়ে। ২০০৪ সালে বেসলান স্কুলে হামলার ঘটনার পর থেকে এটিই রাশিয়ায় হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা। সোভিয়েত আমলের রক সঙ্গীতের দল ‘পিকনিক’ মস্কোর শহরতলীর ৬২০০ আসনের ক্রোকাস সিটি হলে অনুষ্ঠান শুরু করার ঠিক আগে বন্দুকধারীরা বেসামরিকদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। হলটি তখন কানায় কানায় ভরা ছিল। যাচাই করা ভিডিওতে দেখা গেছে, সঙ্গীতানুষ্ঠান উপভোগ করতে আগত দর্শকরা তাদের আসন গ্রহণ করছেন, তখনই একের পর এক গুলির শব্দের মধ্যে তারা চিৎকার করে বের হওয়ার দরজার দিকে ছুটতে শুরু করেন। অন্য ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েক ব্যক্তি লোকজনের দলের ওপর গুলিবর্ষণ করছে। গুলিবিদ্ধ কিছু মানুষ জমে থাকা রক্তের মধ্যে নিথরভাবে পড়ে আছে।
রাশিয়ার তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা ৬০ জনেরও বেশি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ১৪৫ জন আহত হয়েছেন আর তাদের মধ্যে প্রায় ৬০ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। তদন্তকারীরা কালাশনিকভ রাইফেল, রাইফেলের অনেকগুলো ম্যাগাজিনসহ হাতকাটা জ্যাকেট ও গুলির খোসা ভর্তি ব্যাগের ছবি প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে আইএস বলেছে, ‘তাদের যোদ্ধারা মস্কোর শহরতলীতে হামলা চালিয়েছে। কয়েকশজনকে হত্যা ও আহত করেছে এবং স্থানটির ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। তারপর তারা নিরাপদে তাদের ঘাঁটিতে ফিরেছে।’ যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, আইএসের ওই গোষ্ঠীটির দাবি বিশ্বাসযোগ্য। কিন্তু রাশিয়া এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। হামলা চলার এক পর্যায়ে ক্রোকাস সিটি হলে ছাদে আগুন ধরে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ধরার পর হলের ছাদের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। পরে দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন বলে জানা গেছে। জরুরি বিভাগের কর্মীরা কয়েকশ মানুষকে হলটি থেকে বের করে নিয়ে যায়। কিন্তু হামলাকারীদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা পরিষ্কার হয়নি। রাশিয়ার ন্যাশনাল গার্ড বন্দুকধারীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মস্কো হামলার দায় আইএস স্বীকার করেছে এটি নিশ্চিত করেছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। এ ধরনের একটি হামলা হতে পারে বলে মস্কোকে আগেই সতর্ক করেছিল ওয়াশিংটন। রাশিয়া এখনও জানায়নি, এ হামলার জন্য তারা কাকে দায়ী বলে মনে করছে।