ইসরায়েলি হামলার পর ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে এক ফিলিস্তিনি শিশু। গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর হাঁটু গেড়ে আল্লাহর উদ্দেশে সিজদা করেছে ওই ফিলিস্তিনি শিশুটি। গত শনিবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিতে ওই শিশুটির ছবি প্রকাশ করা হয়। তবে শিশুটির বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার লোক নিহত হয়েছে। এদিকে, হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ক্রমাগত বিমান হামলার মুখে বিশৃঙ্খলা, হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতার মুখে ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ও সহায়সম্বল ছেড়ে পালিয়ে গেছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলে ১৪ শ’র বেশি বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার পর ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। হামাসের হামলার পর থেকে গাজা শহরে বিরতিহীন বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। আর এতে ছিটমহলটির ২৬৭০ জন লোক নিহত হয় যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। এদিকে গাজা ছেড়ে যাওয়ার সময় ফিলিস্তিনিরা যতটুকু সম্ভব তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে ব্যাগে ভরে বা স্যুটকেসে বোঝাই করে। কেউ শহর ছাড়ছেন তিন চাকার মোটরসাইকেলে, ভাঙাচোরা গাড়িতে, মালামাল পরিবহণের যানবাহনে অথবা গাধায় টানা গাড়িতে করেও। এটা প্রতিদিনের একটি সাধারণ দৃশ্য। ইসরায়েলের বোমা হামলা থেকে বাঁচতে এবং গাজার দক্ষিণ অংশে সরে যাওয়ার জন্য দখলদার বাহিনীর নির্দেশনার পর মানুষ আশ্রয় নিয়েছে জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলগুলোতে, এমনকি খোলা রাস্তাতেও। গাজার উত্তর অংশে ইসরায়েলের অভিযান পরিচালনার জন্য হাজার হাজার সৈন্য ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েনের পর দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে তারা শুধুমাত্র ‘রাজনৈতিক’ সবুজ সংকেতের জন্য অপেক্ষা করছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে ১১ লাখ ফিলিস্তিনি গাজার উত্তর অংশ থেকে দক্ষিণ অংশে চলে গেছে। তবে দক্ষিণ অংশে এখনও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। খান ইউনিস ও রাফায় চালানো হামলায় লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে চিকিৎসকদের বসতবাড়িও। এদিকে গাজায় হাসপাতালগুলোতে নিহত ও আহতদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা রোববার জানিয়েছেন, ৯ হাজার ৬০০ আহত লোক চিকিৎসা নিচ্ছে সেখানে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় হাসপাতালে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম অকেজো হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের ইনকিউবেটর থেকে শুরু করে পানি শোধন প্লান্ট ও খাবার সংরক্ষণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।