সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ইসরায়েলের এই বিমান হামলায় আইআরজিসির ৭ সেনা কমান্ডারসহ ১১ জনের প্রাণহানী ঘটেছে। প্রতিশোধ নিতে ইরানও সিরিয়ায় মার্কিন ও ইসরায়েলের স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আমেরিকা। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে দেওয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইরানের দূতাবাস প্রাঙ্গণে হামলার ব্যাপারে ওয়াশিংটনের ধারণা ছিল না। ইরান যাতে এই হামলার প্রতিশোধে সিরিয়ায় অবস্থিত মার্কিন সেনা ঘাঁটিগুলোতে হামলা না চালায় তার জন্যও সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার ইরানের দূতাবাসে যে হামলা হয়েছে তা সিরিয়ায় ইরানের স্বার্থের ওপর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আক্রমণগুলোর মধ্যে একটি। দীর্ঘদিন ধরেই সিরিয়ার ইরানের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। তবে এই প্রথম ইরানের দূতাবাসে হামলা চালাল ইসরাইল। গত জানিুয়ারিতে সিরিয়ায় জর্ডান সীমান্তের কাছে এক মার্কিন ঘাটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল ইরানপন্থি যোদ্ধারা। সেই হামলায় তিনজন মার্কিন সেনা নিহত হয়। ইরাক এবং সিরিয়ায় অবস্থিত মার্কিন ঘাটিগুলো বিভিন্ন সময়ে ইরানপন্থি মিলিশিয়াদের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। এবারও আশঙ্কা করা হচ্ছে, ইরানের দূতাবাসে হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরানপন্থি প্রক্সি গ্রুপগুলো ইসরায়েলের পাশাপাশি মার্কিন সামরিক সাথাপনায়ও হামলা চালাতে পারে। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূত রবার্ট উড বলেছেন, আমরা জড়িত নই এমন কোনো ঘটনায় যেন মার্কিন কর্মীদের ওপর আক্রমণ করা না হয়। আমি ইরান ও তার প্রক্সিদের পরিস্থিতির সুবিধা না নেওয়ার জন্য আমাদের পূর্বের সতর্কতা পুনরাবৃত্তি করব।
ইসরায়েলকে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাতা সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনৈতিক ও কনস্যুলার প্রাঙ্গণের আইন লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করে ইরান বলেছে, এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়া তাদের অধিকার। একই সঙ্গে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের ডেপুটি রাষ্ট্রদূত জাহরা এরশাদি বলেছেন, ‘ইসরায়েলি দ্বারা সংঘটিত সমস্ত অপরাধের জন্য দায়ী যুক্তরাষ্ট্র।’ জাহরা এরশাদি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে রাখতে চায়। ফিলিস্তিনে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের নামে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করতে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রকে তার নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের ডেপুটি রাষ্ট্রদূত। একইসঙ্গে ইরানের কূটনৈতিক সীমানায় ইসরায়েলের হামলার নিন্দা প্রস্তাব আনতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাহরা এরশাদি।
এর আগে মঙ্গলবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দামেস্কে হামলার নিন্দা জানান। পাশাপাশি তিনি সকল পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম অবলম্বন করতে এবং আরও উত্তেজনা না বাড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যে কোনো ভুল পদক্ষেপ এই অঞ্চলে বৃহত্তর সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে।