নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলের দাওয়াতী শাখার প্রধান ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী পুস্তিকা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত নোট বই উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত তরিকুল ইসলাম, আকাশ, নাজিমুদ্দিন ওরফে জসীমউদ্দিন, ইসমাইল হাসান অনিক ও রিপন। বুধবার দিবাগত রাতে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইর তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৬ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) খুলনা র্যাব-৬ ব্যাটালিয়ন সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক হিসেবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র সদস্য। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। তারা বিভিন্ন সময় অনলাইনে তামিম আল আদনানী, হারুন ইজহার, গুনবীসহ বিভিন্ন আধ্যাত্মিক নেতার বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সদস্যদের সংগঠনে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তারা সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। তিনি আরও বলেন, তারা সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য প্রদান করে আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের নিকট থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতো। ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদেরকে উগ্রবাদী করে তুলতো। তরিকুল গোপালগঞ্জের একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন। সে ২০২১ সালে দিঘলীয়াতে একটি মাদ্রাসায় অধ্যায়নকালীন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর ওমর নামের একজন উচ্চপদস্থ সদস্যের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে যোগদান করেন। আব্দুল্লাহ’ বাগেরহাটের একটি মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত ছিল। ২০২১ সালে খুলনার দিঘলীয়াতে একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালীন গ্রেফতারকৃত তরিকুলের মাধ্যমে ‘আনসারআল ইসলাম’ এ যোগ দেয়। তাজিমুদ্দিন গোপালগঞ্জের স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ইমামতি করতেন। সে গ্রেফতারকৃত আবদুল্লাহর সহপাঠী ছিলেন। সে ২০২১ সালে আব্দুল্লাহ’র মাধ্যমে আনসার আল ইসলাম’র মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়। সে তরিকুলের কাছ থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সংগ্রহ করতো। ইসমাইল গোপালগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত ছিল। সে তরিকুলের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘আনসার আল ইসলাম’ এ যোগদান করে। গ্রেফতারকৃত রিপন উগ্রবাদী পুস্তিকা সংগ্রহ করে সংগঠনের দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের প্রায় ০৩ হাজার এবং হলি আর্টিজান হামলার পরবর্তী সময়ে প্রায় ০২ হাজার জঙ্গিকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে র্যাব। যখনই জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়েছে তখনই র্যাব ফোর্সেস সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে জঙ্গিদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে।