• বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন
                               

ঘুষ ছাড়া মেলে না ড্রাগ লাইসেন্স

রিপোর্টারঃ / ১৮০ বার ভিজিট
আপডেটঃ বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪

সাতক্ষীরা জেলার পাঁচ হাজার ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে। যার মধ্যে দুই হাজারের মতো লাইসেন্স নীতিমালা না মেনেই ইস্যু করা হয়েছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব লাইসেন্স অবৈধ উপায়ে ইস্যু করা হয়। বাংলাদেশ ক্যামিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির সাতক্ষীরা অফিস সহকারী আলমগীর হোসেন বস্ ওরফে আলমগীর এবং কম্পিউটার অপারেটর সুমনের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলার ড্রাগ সুপার ঘুষ নিয়ে এ কাজ করে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিয়মানুযায়ী কোনো ওষুধের দোকান তথা ফার্মেসি করার জন্য ড্রাগ লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। আর এই ড্রাগ লাইসেন্স তিনিই পাবেন, যার ফার্মাসিস্টের প্রশিক্ষণ ও সনদ রয়েছে। দুই বছর মেয়াদি এ ড্রাগ লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। এজন্য পৌরসভার মধ্যে তিন হাজার টাকা ও পৌরসভার বাইরে গ্রাম এলাকার জন্য এক হাজার পাঁচশ টাকা চালান কেটে জমা দিতে হয়। এরপর দুই বছর অন্তর এ লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়।

ড্রাগ লাইসেন্স করার জন্য ফার্মাসিস্টের এই শর্তটি অনেকেই সঠিকভাবে পূরণ করেন না। অনেকেই ছয় মাস মেয়াদি ফার্মাসিস্ট কোর্স করে ড্রাগ লাইসেন্স সংগ্রহের পর অন্যকে দিয়ে ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করেন। আবার অনেকে ভিন্ন ফার্মেসিতে থেকেই নতুন ফার্মেসি খুলে রমরমা ওষুধ ব্যবসা চালিয়ে বনে গেছেন ডাক্তার। আর এভাবেই সাতক্ষীরা ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চলে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্য। ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে হাজারের অধিক অবৈধ লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আবার তাদের দাবি করা ঘুষ না দিলে সব শর্ত পূরণ করার পরও লাইসেন্স ইস্যু করতে গড়িমসি করা হয়। ড্রাগ লাইসেন্স পেতে ব্যাংক স্বচ্ছলতা সনদপত্র, লাইসেন্স ফি জমা দেয়ার ট্রেজারি চালান, দোকান ভাড়ার রশিদপত্র, ফার্মাসিস্টের অঙ্গীকারনামা ও পৌর/ইউনিয়নের ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হয়। পাঁচ থেকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে নবায়ন করে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তাদের নির্দিষ্ট অংকের ঘুষ না দিলে বেগ পোহাতে হয় বছরের পর বছর।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন সুন্দরবন ফার্মেসির মালিক আবু জাফর সিদ্দিক ড্রাগ লাইসেন্স করতে সাতক্ষীরা জেলা ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে গেলে কতিপয় ব্যক্তি ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। পরবর্তীতে অফিস সহকারী আলমগীরের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েও মেলেনি লাইসেন্স। আশাশুনির আনুলিয়া বাজারের রহমান ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট নেই। ওই ফার্মেসির মালিক এক ফার্মাসিস্টকে দোকানের কর্মচারী দেখিয়ে ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য অফিস সহকারী আলমগীর ও সুমনের মাধ্যমে ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে আবেদন করেন। পরে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে ড্রাগ সুপার লাইসেন্স ইস্যু করেন। এদিকে বেশিরভাগ ফার্মেসি টাকা দিয়ে লাইসেন্স নিলেও ভয় আর আতঙ্কে মুখ খুলতে চায় না। বাংলাদেশ ক্যামিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির সাতক্ষীরা অফিসের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে ঘুষ লেনদেন দীর্ঘদিনের ব্যাপার। টাকা না দিলে এখানে মেলেনা ড্রাগ লাইসেন্স। আর এগুলো আলমগীর ও সুমনের মাধ্যমেই হয়।

এ ব্যাপারে মূল অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘মানুষ কি এতটাই পাগল হয়ে গেছে যে এতগুলো টাকা দেবে লাইসেন্স করার জন্য, যা শুনছেন তা মিথ্যা।’ কম্পিউটার অপারেটর সুমন মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এসব প্রতিবেদন বাদ দেন ভাই। আমি দেখা করবানে। দেখা হলে সব মিটে যাবেনে।’ সাতক্ষীরা জেলা ড্রাগ সুপার আবু হানিফ বলেন, ড্রাগ লাইসেন্স পেতে ও নবায়ন করতে সরকারি ফি ছাড়া কোনো টাকা নেওয়া হয় না। অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তার নাম ভাঙ্গিয়ে কে বা কারা টাকা নিয়ে থাকে তা তিনি জানেন না।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

আজকের দিন-তারিখ

  • বৃহস্পতিবার (রাত ১২:০৩)
  • ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • ৯ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

Our Website Visitors Summary

  • ১১
  • ৮৩
  • ৫২৫
  • ২,১৮৯
  • ২৬,০২৪
  • ৩৫,৪৮০