• বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন
                               

কার প্ররোচণায় পোশাক শ্রমিকেরা এখনও রাস্তায়

রিপোর্টারঃ / ২৮০ বার ভিজিট
আপডেটঃ শনিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৩

নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পরেও গাজীপুর, সাভার ও ঢাকার মিরপুরের পোশাক তৈরি কারখানাগুলোর কিছু শ্রমিক মাঠ ছেড়ে যায়নি। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত কয়েক মাসের শ্রমিক আন্দোলনের মুখে পড়ে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। প্রতিদিনই আন্দোলনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তার সাথে পাল্লা দিয়ে কারখানা ও গাড়ি ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও ও পুলিশের সাথে সংঘাত-সংঘর্ষও বেড়ে চলছে। কারখানাগুলোও যদি শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে একে একে বন্ধ হতে থাকে তাহলে বৈদেশিক আয়ের এই প্রধান খাতটি শুধু হুমকির মুখেই পড়বে না, তা পুরোপুরি ধ্বংসও হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে নতুন বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে শ্রমিকদের যে আন্দোলন চলছে, তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। বৃহস্পতিবার পোশাকশিল্প মালিকদের এক সমন্বয় সভায় সব কারখানায় নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখা, কারখানায় ভাঙচুর হলে প্রয়োজনে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সূত্র বলছে, কিছু শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রত্যক্ষ মদদে শ্রমিকেরা কাজে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। এমনকি গত ১৫ দিন মাঠে আন্দোলনে ছিলেন এমন শ্রমিকরাই বলছে, কিছু বাম শ্রমিক সংগঠন তাদের বলেছে মালিকের ২৫ হাজার টাকা দেয়ার সামর্থ থাকলেও দিচ্ছে না। ২৫ হাজার না দিলে কাজে যোগ দিতে নিষেধও করছেন তারা। ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে পোশাক শ্রমিকরা প্রায় এক মাস ধরে আন্দোলন করার পরে গত মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত মজুরিবোর্ড শ্রমিকদের জন্য ১২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে। কিন্তু শ্রমিকরা এই মজুরি প্রত্যাখ্যান করে তাদের চলমান আন্দোলনকে চালিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়। এরই জের ধরে শ্রমিক বিক্ষোভ এখন আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চলমান শ্রমিক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। সরকারের বেঁধে দেয়া নূন্যতম মুজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা মেনে নিয়ে বেশিরভাগ গার্মেন্টস শ্রমিক কাজে ফিরলেও, কতিপয় প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা বিষয়টি নিয়ে সহিংস আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এমন আন্দোলন চলতে থাকলে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শিল্পের আন্তর্জাতিক সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার অবকাশ রয়েছে।

আন্দোলনের বাইরে থাকা বেশ কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা শুরুর দিকে বেতন বাড়ানোর আন্দোলনে যুক্ত হলেও পরে আর যোগ দেননি। নতুন বেতন স্কেল ঘোষণার পরে কাজে ফিরে গেছে বেশিরভাগ। কিন্তু কিছু মানুষ তাদের রাস্তায় থাকতে উদ্বুদ্ধ ককরছে। সেটা একটা বিরাট ষড়যন্ত্র। যুগ যুগ ধরে শ্রমিকদের নিয়ে সংগঠনগুলো এ রকমই করে আসছে। কারখানা মালিকদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় বিজিএমইএ সভাপতি দাবি করেন, গত ৪০ বছরে ৬৮৮৫টি পোশাক কারখানা বিজিএমইএ’র সদস্যপদ গ্রহণ করলেও, ৩৯৬৪টি সদস্যের কারখানা বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। অবশিষ্ট ২৯২১টি সদস্য কারখানার মধ্যে ২৩৩৯টি কারখানা বিজিএমইএতে তাদের সদস্যপদ নবায়ন করেছে। এই ২৩৩৯টি সদস্য কারখানার মধ্যে মাত্র ১৬০০টি সদস্য কারখানা ক্রেতাদের কাছ থেকে সরাসরি অর্ডার এনে কাজ করছে।

বাকি কারখানাগুলোর মধ্যে ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যক’ কারখানা বিভিন্ন ব্যাংক দেনা ও দায়ের কারণে সরাসরি ব্যাক-টু-ব্যাক খুলতে পারছে না। ফলে তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে সরাসরি অর্ডার নিতে পারছে না। এই সদস্য কারখানাগুলো মূলত সাব-কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছে।

নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ষষ্ঠ সভায় পোশাক শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজুল ইসলাম রনি। ঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামোতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ছোট এবং মাঝারি কারখানার সংখ্যাই বেশি। আমাদের বেশিরভাগ শ্রমিক সেখানেই কাজ করেন। কাজেই দাবি আদায় করতে গিয়ে ওই সব কারখানার মালিকরা যেন বেকায়দায় না পড়েন সেদিকে বিবেচনা করা উচিত।

এদিকে, শ্রমিক নেতারা বলেন, যখন পোশাক শ্রমিক মজুরি প্রত্যাখ্যান করে পুনর্বিবেচনার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে তখন গাজীপুরে ও আশুলিয়ায় শ্রমিকের উপর হামলা-গুলি-সাউন্ড গ্রেনেড-রাবার বুলেট-টিয়ারসেল নিক্ষেপের ঘটনা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। গত ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে ১১ সংগঠনের জোট ‘মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন’ সহ অন্যান্য শ্রমিক সংগঠন ৪০ লাখ পোশাক শ্রমিককে খেয়ে-পরে বাঁচার প্রয়োজনে ২৫ হাজার টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা বলছেন, আমাদের বলা হয়েছে, নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি হয়েছে। ভিয়েতনামকে ছাপিয়ে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশের পোশাকখাত। ১০০ বিলিয়নের লক্ষ্য মাত্রা নিয়ে আগাচ্ছে মালিকপক্ষ। ফলে মালিকদের যে সামর্থ্য, তাতে শ্রমিকদের কাঙ্খিত মজুরি এবং বাঁচার মতো মজুরি দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব। কাজের শুরুতেই বেতন কত হতে পারে জানতে চাইলে রহিম বাদশা বলেন, আমি তো কাজ জানি না, শুরুর বেতন সাড়ে ১২ হাজার টাকা ঠিক আছে। কিন্তু এই বাজারে চলমু ক্যামনে সেই চিন্তা মাথায়।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

আজকের দিন-তারিখ

  • বৃহস্পতিবার (রাত ১:০৪)
  • ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  

Our Website Visitors Summary

  • ২৬
  • ৮৭
  • ৫৯২
  • ১,৮১৯
  • ২৫,৩৮৭
  • ৩৪,৪২৫