মৌসুমের প্রথম পরাজয় বরণ করেছে পিএসজি। শুক্রবার লিগ ওয়ানে কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোল সত্ত্বেও নিসের কাছে ৩-২ গোলের পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। নিসের হয়ে টেরেম মোফি করেছে দুই গোল। পার্ক ডি প্রিন্সেসে ২১ মিনিটে এমবাপ্পের একটি বাজে ভুলে মোফি গোল করে নিসকে এগিয়ে দেন। ফরাসি স্ট্রাইকার অবশ্য কিছুক্ষন পরে গোল করে ভুলের মাশুল দিয়েছেন। কিন্তু বিরতির আট মিনিট পর গিটান লাবোর্দে আবারো সফরকারী নিসকে এগিয়ে দেন। ৬৮ মিনিটে মোফি আরো এক গোল করলে নিসের জয় সময়ের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। এমবাপ্পে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে এক গোল করলেও ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের হার এড়াতে পারেননি। টেবিলের শীর্ষে থাকা মোনাকোকে টপকে যেখানে উপরে ওঠার সুযোগ ছিল লুইস এনরিকের পিএসজির সামনে, সেখানে পাঁচ ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এক পয়েন্ট এগিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অপরাজিত নিস। পিএসজির কোচ হিসেবে প্রথম পরাজয়ের পর এনরিকে বলেছেন, ‘পুরো ম্যাচেই গতিতে তারা আমাদের চেয়ে এগিয়ে ছিল। অবশ্যই এই পরাজয়ে আমি দারুন হতাশ। আমাদের সবাইকে উন্নতি করতে হবে, এমনকি আমাকেও। কিন্তু দলের মানসিকতায় আমি খুশী। তাদের দুই গোলের মধ্যে দুটি ছিল ডিফ্লেকটেড। নিস আজ দারুন ফুটবল খেলেছে। কিন্তু আমি এসব নিয়ে চিন্তিত নই। আমি দেখেছি সমর্থকরা আজ আমাদের কিভাবে সমর্থন যুগিয়েছে, এমনকি আমরা যখন দুই গোলে পিছিয়ে ছিলাম তখনো তারা আমাদের পক্ষে চিৎকার করেছে।’ গত মৌসুমে হতাশাজনক ফলাফলে পর এবারের লিগে ঘুড়ে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছ ব্রিটিশ ধনকুবের জিম র্যাটক্লিফের দল নিস। টেবিলের নয় নম্বরে থেকে গত মৌসুম শেষ করেছিল নিস। কোচ ফ্রান্সেসকো ফারিওলি বলেছেন, ‘এখানে ফল পেতে হলে সবকিছুই শতভাগ নিখুঁত হতে হবে। আজ আমরা সেটাই করে দেখিয়েছি। যদিও পিএসজি তাদের মান অনুযায়ী খেলতে পারেনি। আর সেই সুযোগটাই আমরা নিয়েছিল। কৌশলগত দিক ছাড়াও আমি আজ সকলের মধ্যে লড়াই করার মানসিকতা দেখেছি।’ ম্যাচ শুরুর আগে ইটালিয়ান মিডফিল্ডার মার্কো ভেরাত্তিকে পার্ক ডি প্রিন্সেস থেকে বিদায় জানিয়েছে পিএসজি। ১১ বছরের সম্পর্ক শেষ করে ভেরাত্তি কাতারি ক্লাব আর-আরাবিতে যোগ দিয়েছে। এ সময় সাবেক দুই সতীর্থ জøাটান ইব্রাহিমোভিচ ও থিয়াগো সিলভার শুভ কামনা বার্তা জানিয়ে জায়ান্ট স্ক্রিনে প্রদর্শন করা হয়। পিএসজির হয়ে ভেরাত্তি দীর্ঘ সময়ে ৪১৬টি ম্যাচ খেলেছেন। এর মধ্যে ৯টি লিগ ওয়ান, ছয়টি ফ্রেঞ্চ কাপের শিরোপ জয় করেছেন। তবে দলকে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা উপহার দিতে পারেননি। ২১ মিনিটে পিএসজির রক্ষনভাগের আগোছালো কৌশলে হঠাৎ করেই লীড নেয় নিস। এমবাপ্পে বল নিয়ে পজিশন নিতে গিয়ে পাস দিতে ব্যর্থ হন। সেই বলে মোফির শট মিলয়ান স্ক্রিনিয়ারের সাথে ডিফ্লেকটেড হয়ে জালে জড়ালে এগিয়ে যায় নিস। খেপরেন থুরামের শট পিএসজি গোলরক্ষক গিয়ানলুইগি ডোনারুমা দারুনভাবে রক্ষা না করলে তখনোই হয়তো ব্যবধান দ্বিগুন হতে পারতো। আচরাফ হাকিমির কাট-ব্যাক থেকে শক্তিশালী শটে নিস গোলরক্ষক মার্সিন বুলকাকে পরাস্ত করে এমবাপ্পে পিএসজিকে ম্যাচে ফেরান। এবারের মৌসুমে চার ম্যাচে এটি এমবাপ্পের ষষ্ঠ গোল। এই গোলের পর পিএসজি ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয়। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে নিসের সুইস ডিফেন্ডার জর্ডান লোটোম্বার শট অল্পের জন্য বারের উপর দিয়ে চলে যায়। ৫৩ মিনিটে মোফির সহায়তায় লাবোরডে আবারো নিসকে এগিয়ে দেন। ৬৮ মিনিটে পিএসজরি রক্ষনভাগের ভুলে নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার মোফি নিজের দ্বিতীয় গোল করলে নিসের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। বদলী হিসেবে গতকাল শুক্রবার পিএসজির হয়ে অভিষেক হয়েছে রানডাল কোলো মুয়ানির। ম্যাচ শেষের তিন মিনিট আগে কোলো মুয়ানির এ্যাসিস্টে এমবাপ্পের দুর্দান্ত ভলি পিএসজিকে স্বস্তি এনে দিতে পারেনি। আগামী মঙ্গলবার বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মিশন শুরু করার আগে পিএসজরি সামনে এখন আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ।