প্রতি বছরের মত এবারও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে রামপালের পাঁচ শতাধিক জেলে বহদ্দার নৌকা সাজিয়ে সমুদ্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন। বুধবার (০১ নভেম্বর) রামপাল থেকে মাছ ধরার সরঞ্জাম ও লোকজন নিয়ে সকাল থেকে রওনা দিয়েছেন তারা। বন বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে মোংলার জয়মনিরগোল থেকে একসাথে সকল জেলে সুন্দরবনের দুবলার চরসহ অন্যান্য চরে গিয়ে আগামী মে মাস পর্যন্ত অবস্থান করবেন।
এ বিষয়ে সমুদ্রগামী মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি মো. শহিদ মল্লিক জানান, এবার ও শত কোটি ভোটার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জেলে পল্লীর জেলেরা সমুদ্রে যাচ্ছে। নৌকা ও জাল ভেদে প্রতিজন বহদ্দারের সর্ব নিন্ম ১৫ লক্ষ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করে সুন্দরবনে যেতে হচ্ছে। এতে প্রতিজন বহদ্দারের গড়ে ঋণ করতে হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা। কেউ সমিতির কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন। কেউ ব্যাংক থেকে। আর ৯০ ভাগ জেলে ঋণ করেছে সূদে মহাজনদের কাছ থেকে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করুন বলেন, পেশাদারী সূদে মহাজনরা প্রতিবছর শতকরা চল্লিশ ভাগ বা তারও বেশি সূদে ঋণ দেয়। সহজ শর্তে সরকারি ব্যংকগুলো ঋণ প্রদান করলে জেলেরা বেঁচে থাকতে পারতো। তিনি সহজ শর্তে সরকারি ঋণ প্রদানের দাবি করেন।
‘সেভ দ্য সুন্দরবন’ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন ডক্টর শেখ ফরিদুল ইসলাম জানান, সমুদ্রগামী জেলেরা প্রতিবছর সরকারকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব দিলেও তাদের ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। এখনও সূদে মহাজনের কাছ থেকে চড়া সূদে ঋণ নিয়ে তাদের সমুদ্রে যেতে হয়। ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে তাদের হাতে আর কোন টাকা থাকে না এ কারণে তাদের ভাগ্য বদল হয় না। তিনি সহজ শর্তে সরকারি ঋণ প্রদানের জোর দাবী করেন।
এ ছাড়াও তিনি বলেন, সমুদ্রগামী জেলেদের আবাসন সমস্যা, সুপেয় পানির তীব্র সংকট, স্বাস্থ্য সেবা নেই বললে চলে। ঝড় জলোচ্ছ্বাসের সময় আশ্রয় কেন্দ্রও নেই যে, যেখানে দুর্যোগ কালিন সময়ে আশ্রয় নিতে পারেন। সরকারে সংশ্লিষ্ট বন্ধ মন্ত্রণালয় বা বন দপ্তর সমুদ্রগামী মৎস্য আহরণকারী জেলেদের সকল প্রকার সমস্যার সমাধানে আশ্বাস দিলেও তাদের ভাগ্যের কোন উন্নয়ন হয় না। তিনি জেলে, বাওয়ালি, মৌয়ালীদের সকল সমস্যার সমাধানে সরকারের সকল সংস্থাকে এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানান।