আনোয়ারায় মোহাম্মদ শাহেদ হত্যা মামলায় ৩ ভাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের ৭ম অতিরিক্ত দায়রা জজ আ.স.ম. শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালত এই রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আনোয়ারা উপজেলার শিলাইগড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ড খলিল মেম্বাবের নতুন বাড়ীর মৃত আলি আহমেদের ৩ ছেলে হারুন রশিদ, জাহেদ হোসেন টুন্টু ও আনোয়ার হোসেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী হাফেজ আহম্মেদ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১ জুলাই আনোয়ারা উপজেলার মধ্যম শিলাইগড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ড খলিল মেম্বাবের নতুন বাড়ীর পশ্চিম পাশে রাজা সরদার রোডে মোহাম্মদ শাহেদের বাড়ির পাশের বিলে আসামি জাহেদ হোসেন ভাসা জাল বসিয়ে মাছ ধরতে গেলে তাকে শাহেদ বাঁধা দেয়। এই নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে জাহেদ মোবাইলে কল দিয়ে তার দুই ভাই হারুন ও আনোয়ারকে ডেকে আনে। এরপর তারা এক সাথে ধারালো কিরিচ, দা ও লোহার রড দিয়ে শাহেদের উপর হামলা করে। এক পর্যায়ে হারুন দা দিয়ে শাহেদের মাথায় কোপ দেয়। এরপর শাহেদের চিৎকারে শুনে এসে তাকে উদ্ধার করে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তার অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য নির্দেশ দেয়। চমেক হাসপাতালে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আইসিইউ প্রয়োজন হলে চমেক হাসপাতালে খালি না থাকায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ২ জুলাই সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহেদের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় সেদিনই ৩ ভাইকে আসামি করে আনোয়ারা থানায় শাহেদের চাচা মো. ইউনুছ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলায় ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই রায় দেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, সাক্ষ্য প্রমাণে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৩ ভাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় জাহেদ হোসেন টুন্টু ও আনোয়ার হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর পলাতক হারুন রশিদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।