বিরোধী দলের প্রস্তাবের ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে তোলা হবে অনাস্থা ভোট প্রস্তাব। তার প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে লোকসভায় আলোচনা হবে। তবে মোদি নিজে এদিন উপস্থিত থাকবেন না। এনডিটিভি মঙ্গলবার (৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রথমদিন অনাস্থা ভোটের আলোচনা শুরু করবেন সদ্যই পার্লামেন্টের সদস্যপদ ফিরে পাওয়া কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। গত ২৬ জুলাই কংগ্রেসের এক আইনপ্রণেতা এই অনাস্থা ভোট প্রস্তাব করেন। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা নিয়ে চুপ থাকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে এ অনাস্থা ভোট প্রস্তাব করে প্রধান বিরোধী দলটি।
এদিকে গত বছরের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। মোদিও কী ইমরান খানের মতো একই পরিণতি ভোগ করবেন এবং প্রধানমন্ত্রিত্ব হারাবেন? এর উত্তর হলো— ‘না’। ইমরান খানের বিরুদ্ধে যখন অনাস্থা ভোট হয় তখন তার জোটের নেতারাও তার সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন। এতে ইমরান খান সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছিলেন। কিন্তু ইমরানের মতো মোদির প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর কোনো শঙ্কা নেই। এছাড়া বড় কোনো সমস্যায়ও পড়বেন না তিনি। কারণ ৫৪৩ আসনের লোকসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জোট দল এনডিএ-এর।
বিরোধী দল কংগ্রেসও জানিয়েছিল, মোদিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এ অনাস্থা ভোট প্রস্তাব করেনি তারা। মূলত মণিপুর ইস্যু নিয়ে যেন মোদি বিস্তারিত আলোচনা করেন সেজন্য এটির ব্যবহার করছেন তারা। অনাস্থা ভোটের মুখে পড়ায় এখন মোদিকে নিজের সরকার নিয়ে বিস্তর আলোচনা করতে হবে। নিজের এবং সরকারে পক্ষে সাফাই গাইতে হবে। জুনের প্রথম সপ্তাহে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে এখন পর্যন্ত ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু এ সহিংসতা নিয় মুখ খোলেননি মোদি। যদিও তিন সপ্তাহ আগে মণিপুরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে করে হাঁটানোর ঘটনা ভাইরাল হলে এ নিয়ে সংক্ষিপ্ত কথা বলতে বাধ্য হন তিনি। ২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মোদি এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো অনাস্থা ভোটের মুখে পড়েছেন। ২০১৮ সালে তার সরকারের বিরুদ্ধে ভোটাভোটি হলেও সেটি বাতিল হয়ে যায়।
ভারতের আইন অনুযায়ী লোকসভায় যদি কোনো দল অনাস্থা ভোট আনতে চায়, তাহলে কমপক্ষে ৫০ জন আইনপ্রণেতাকে এই প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে হবে। যা কংগ্রেস খুব সহজেই পেয়ে গিয়েছিল। এদিকে অনাস্থা ভোটের আগে মঙ্গলবার সংসদীয় দলের বৈঠক ডেকেছে বিজেপি। সেখানে তারা এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে। এই অনাস্থা ভোটের প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঁচজন মন্ত্রী এবং পাঁচজন আইনপ্রণেতা পার্লামেন্টে বিতর্ক করবেন। বিজেপি বলছে, ১৯৯৩ ও ১৯৯৭ সালেও মণিপুরে সহিংসতা হয়েছিল ওই সময় এ নিয়ে সংসদ কোনো বিবৃতি দেয়নি।